গাজায় ইসরায়েলি গুলিতে আহত ফিলিস্তিনির মৃত্যু

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আহত হওয়ার একদিনের মাথায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক ফিলিস্তিনি তরুণের মৃত্যু হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-এর থবর থেকে তার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহত ২০ বছর বয়সী মোহাম্মেদ নাসির সুররাবকে শুক্রবার গাজা উপত্যকার খান ইউনিস শহরের পূর্বপ্রান্তে বিক্ষোভের সময় গুলি করে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিন ১৫ বছর বয়সী ওথমান হেলেস নামে আরেক যুবককে গুলি করে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই হামলায় আরও প্রায় ২২০ জন ফিলিস্তিনি আহত হন।

Gaza (Mohammed Asad)

শুক্রবার গাজার পাঁচটি স্থানে ইসরায়েলি সীমান্ত বেড়ার কাছে বিক্ষোভ করেন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি। বিক্ষোভকারীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে মাহাম্মেদ নাসির আহত হন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শনিবার সকালে নাসির সুররাবের হৃদস্পন্দন থেকে যায়।

গত ৩০ মার্চ শুরু হওয়া গ্রেট রিটার্ন মার্চ কর্মসূচির পর থেকে ধারাবাহিক বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে ফিলিস্তিনিরা। ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে ১৯৪৮ সালের ১৫ মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল নামের রাষ্ট্র। ১৯৭৬ সালের ৩০ মার্চ ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ইহুদি বসতি নির্মাণের প্রতিবাদ করায় ছয় ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়। পরের বছর থেকেই ৩০ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত পরবর্তী ছয় সপ্তাহকে ভূমি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ফিলিস্তিনিরা। কর্মসূচির শেষ দিনটিকে ফিলিস্তিনিরা‘নাকবা’ বা বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।

গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, এবারের ভূমি দিবসের আন্দোলন শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। তবে এর মধ্যে কোনও ইসরায়েলির হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

অবরুদ্ধ গাজা থেকে পণ্য পাঠানো ও প্রয়োজনীয় পণ্য আনার জন্য ব্যবহৃত কেরেম শালোম সীমান্তে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসরায়েল। সোমবার তারা জানিয়েছে, মানবিক বিবেচনায় প্রয়োজনীয় এমন পণ্য ছাড়া আর কোনও কিছু গাজাতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। একই সঙ্গে গাজার জেলেদের জন্য মাছ ধরার এলাকা ৬ ন্যাটিক্যাল মাইলে নামিয়ে এনেছে ইসরায়েল। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর শুক্রবার জোরালো বিক্ষোভে শুরু করেন গাজার অধিবাসীরা।

ইসরায়েল দখলকৃত গাজায় ২০  লাখ মানুষের বাস। ২০০৬ সালে হামাসের বিজয়ের পর ২০০৭ এ সেখানে ইসরায়েল অবরোধ আরোপ করে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেখানকার অধিবাসীদের স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ রয়েছে, বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেখানকার ৮০ শতাংশ মানুষ আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে। এরই মধ্যে পণ্য ও ত্রাণ সামগ্রী আনা নেওয়ার একমাত্র পথটির ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী।