নওয়াজ ও মরিয়মের আপিলের শুনানি নির্বাচনের পরে

পাকিস্তানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ, তার মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ ও মরিয়মের স্বামী ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ সফদরের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাদের করা আপিলের শুনানি জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মূলতবি ঘোষণা করেছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের এক প্রতিবেদন থেকে একথা জানা যায়।

MARYAM-3-750x369-750x369২৫ জুলাই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন। আদালতের এই অবস্থানের কারণে নির্বাচনের আগে নওয়াজের বিরুদ্ধে ঘোষিত সাজার ব্যাপারে নতুন কোনও সিদ্ধান্তের সুযোগ থাকছে না।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তিনজনের করা সাতটি পৃথক আপিলের আবেদনের বিষয়ে শুনছিলেন আদালত। নওয়াজ শরীফের পরিবারের সদস্যদের হয়ে এই আপিল করেছেন তিনজন আইনজীবী। নওয়াজের হয়ে তিনটি, ও মরিয়ম ও সফদরের হয়ে দুইটি করে আপিল করেছেন তারা।

লন্ডনে কেনা বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধে দেওয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফ আর তার মেয়ে মরিয়মকে কারাদণ্ড দেয় আদালত। রায় ঘোষণার সময় লন্ডনে অবস্থানরত পিতা ও কন্যা শুক্রবার দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ ও নওয়াজের নিজের নির্বাচনি এলাকা পাঞ্জাবের পুলিশ কর্মকর্তাদের সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে পিএমএল-এন নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া দলটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল

বিচারপতি মহসিন আখতার কায়ানি ও বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেবকে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ এই শুনানি জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত মূলতবি করেন।  

এই বেঞ্চের সামনে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় আসামিপক্সের আইনজীবী খাজা হারিস বলেন, একাউন্টিবিলিটি আদালতের বিচারপতি কখনোই আভেনফিল্ড সম্পদের পরিমান কিংবা ক্রয়ের বিষয়ে নির্দিষ্ট রায় দেননি। এমনটি নওয়াজ শরীফের আয় নিয়েও কিছু বলা হয়নি।

হারিস বলেন, আভেনফিল্ড অ্যাপার্টমেন্টগুলো যে নওয়াজের মালিকানায় রয়েছে সেবিষয়ে কোনও প্রমাণও দেখাতে পারেনি  

মরিয়ম ও সফদরের আইনজীবী আমজাদ পারভেজ বলেন, মরিয়মের বিরুদ্ধে রায়ের ক্ষেত্রে শুধু ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ রবার্ট র‌্যাডলির মতামতের ওপর ভিত্তি করেছে আদালত। রেডলি বলেছিলেন, সম্পদের দলিলগুলো বৈধ নয় এবং ২০০৬ সালে ক্যালিব্রি ফন্টে লেখা হয়েছিলো সেটা। অথচ সেসময় সেই ফন্ট ছিলোই না। আমজাদ পারভেজ বলেন, ২০০৫ সালে রেডলি নিজেই সেই ফন্ট ব্যবহার করেছেন।

ক্যাপ্টেন সফদরকে নিয়ে পারভেজ বলেন, ১৭৪ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক একবারই সফদরের নাম উল্লেখ করেছেন। আর সেটাও শুধু এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার সময়ই।

আদালত অ্যাভেনফিল্ড ইস্যুতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠিয়েছেন এবং পরবর্তী শুনানিতে উপস্থিত থাকতে বলেছেন।

হারিস বলেন, অ্যাভেনফিল্ড ইস্যুতে বিচারক মোহাম্মদ বশির গালফ স্টিল মিলের বিক্রির প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে উপস্থাপিত তথ্য প্রমাণ খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এবারও যেহেতু একই উৎস থেকে তথ্য নেওয়া তাই এবারও বাতিল হতে পারে।  

বাকি দুটি রেফারেন্স থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য বিচারক বশিরের চিঠির কথা জানানো হলে বিচারপতি কায়ানি বলেন, বিষয়টি প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।