কয়েদিদের রোষানলে নওয়াজ, কারা প্রাঙ্গণে চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ

আদিয়ালা জেলে থাকা পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের চলাফেরা সীমিত করেছেন কারা কর্তৃপক্ষ। কয়েকজন কারাবন্দি তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ার পর এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সকালে কারাগারে নিজের ব্যারাক প্রাঙ্গণে হাঁটতে বের হওয়ার পর ওই কারাবন্দিদের ক্ষোভের মুখে পড়েন নওয়াজ। চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপের কারণে কারাগারের মসজিদে গিয়েও নামাজ আদায় করতে পারবেন না সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

কারাগারে নওয়াজ (প্রতীকী ছবি)
লন্ডনে কেনা বিলাসবহুল চারটি ফ্ল্যাটের মূল্য পরিশোধে দেওয়া অর্থের উৎস দেখাতে ব্যর্থ হওয়ার দায়ে ৬ জুলাই নওয়াজ শরিফকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। মেয়ে মরিয়মকে দেওয়া হয় ৭ বছরের কারাদণ্ড। ১৩ জুলাই লন্ডন থেকে আবুধাবি হয়ে দেশে ফিরেই গ্রেফতার হন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নওয়াজ ও তার কন্যা মরিয়ম। তখন থেকে আদিয়ালা জেলেই আছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নওয়াজ শরিফ কারাগার প্রাঙ্গণে হাঁটতে বের হওয়ার পর কয়েকজন কারাবন্দি তিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পরে তার চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা আরোপ করেন আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ। কেবল তা-ই নয়, নওয়াজ ও মরিয়মকে সাবজেল ঘোষিত সাফওয়াত লজে স্থানান্তরের কথাও ভাবা হচ্ছে। এটি সিহালা রেস্ট হাউস নামেও পরিচিত। সিহালা পুলিশ কলেজ প্রাঙ্গণে এর অবস্থান। গত ১৩ জুলাই ইসলামাবাদ ক্যাপিটেল টেরিটরি (আইসিটি) প্রশাসন নওয়াজকে আটকের জন্য রেস্ট হাউসটিকে সাবজেল ঘোষণা করে। তবে সেদিন নওয়াজ ও মরিয়মকে সাবজেলে না নিয়ে আদিয়ালা জেলে পাঠানো হয়।

নওয়াজ ও মেয়ে মরিয়ম
এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা ডনকে বলেন, ‘একটি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াড বুধবার (১৮ জুলাই) রাতে সিহালা পুলিশ কলেজে চিরুনি অভিযান চালিয়েছে; যেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার মেয়েকে সিহালায় স্থানান্তর করা হলে সেখানে কোনও বিস্ফোরক না থাকে।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর জন্য জেলে থাকাটা অনিরাপদ বলে বিবেচিত হতে পারে। কারণ, সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত উচ্চমাত্রার বন্দিরা সেখানে আছে। জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা ডনকে বলেন, আদিয়ালা জেলের বাইরেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কারণ, সেখানে অনেক মানুষ তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। পিএমএল-এন কর্মীরাও নওয়াজ ও মরিয়মের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে ভিড় জমান।

সাফওয়াত লজ এরইমধ্যে পরিষ্কার করা হয়েছে। ফুল, পেইন্টিং আর ফটোগ্রাফ দিয়ে তা সাজানো হয়েছে। সেখানে বন্দিদের একটি করে ডাবল খাট, দুটি করে চেয়ার ও একটি টেবিল দেওয়া হবে। ১৯৯৬ সালে সরকার পতনের পর ওই একই লজে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও পিপিপি’র সহ-সভাপতি আসিফ আলি জারদারিকে বন্দি রাখা হয়েছিল। অতীতে এ রেস্ট হাউসে বন্দি ছিলেন আরও অনেক রাজনৈতিক নেতা।