অমুসলিম প্রার্থীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল ইরান

ইরানের একটি শহরে সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও নিষেধাজ্ঞার শিকার হয়েছিলেন জরাথ্রুস্টবাদ ধর্মের একজন অনুসারী। শনিবার তার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে দেশটির উচ্চপর্যায়ের কর্তৃপক্ষ। বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, অমুসলিম হওয়ার কারণে তাকে বরখাস্ত করেছিল ইরানের ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল।’ তাদের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছিলেন স্বয়ং দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
noname

ইসলামের আগমনের পূর্বে জরাথ্রুস্টবাদ ইরানের প্রধান ধর্ম ছিল। সরকারি হিসেব মতে এখন দেশটিতে জরাথ্রুস্টবাদের অনুসারী মাত্র ২৫ হাজার। সেপান্তা নিকনাম জরাথ্রুস্টবাদ ধর্মের একজন অনুসারী। ইরানের ইয়াজ শহরের কাউন্সিল নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিল’ তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল এই বলে যে স্থানীয় নির্বাচনে শুধুমাত্র মুসলমানরাই প্রার্থী হতে পারে। তাদের এ সিদ্ধান্তে ইরানের সংস্কারবাদী ও সাধারণ মানুষের তরফ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সংসদের স্পিকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন এবং জানান সেপান্তা নিকনামের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা দুঃখজনক। পরবর্তীতে দেশটির সংসদ ও ‘গার্ডিয়ান কাউন্সিলের’ মধ্যে হওয়া মতবিরোধ নিরসনে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ‘এক্সপেডিয়েন্সি কাউন্সিল’ ওই নিষেধাজ্ঞা রদ করে দেয়।

গার্ডিয়ান কাউন্সিল ইরানের অত্যন্ত শক্তিশালী কর্তৃপক্ষ। গার্ডিয়ান কাউন্সিলে রয়েছেন ১২ জন সদস্য। এদের ছয় জন ফিকাহ বিশেষজ্ঞ এবং ছয় জন বিচারপতি।  জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান ও প্রার্থীদের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তাদের হাতে। বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গার্ডিয়ান কাউন্সিলের শুধু জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেই ক্ষমতা প্রয়োগের এখতিয়ার রয়েছে, স্থানীয় নির্বাচনে নয়, এমন যুক্তি দেখিয়ে সংসদ গার্ডিয়ান কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু নিকনামের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য সেটা যথেষ্ট ছিল না।
noname

২১ জুলাই এক্সপেডিয়েন্সি কাউন্সিল এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে, যার মাধ্যমে নিকনামের জন্য আবার স্বপদে আসীনের পথ উন্মুক্ত হয়। এক্সপেডিয়েন্সি কাউন্সিলের মাজিদ আনসারি ওই নিষেধাজ্ঞা রদের ঘোষণা দেন। আনসারি বলেছেন, ‘ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ১৯৯৬ সালের আইন এখনও কার্যকর রয়েছে। তারা তাদের শহরে স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন।’