ভুল অভিযোগে লন্ডনে বাংলাদেশি নারীর ফ্লাইট বাতিল, ক্ষমা চাইলো ইজিজেট


লন্ডনের গেটউইক বিমানবন্দরে হেনস্তার শিকার এক ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পরিবার
'পাসপোর্ট সম্ভবত সঠিক নয়' এমন সন্দেহে লন্ডনের গেটউইক এয়ারপোর্টে এক বাংলাদেশি নারীর ভিসা আটকে দেওয়ায় নির্ধারিত ফ্লাইট মিস করেছেন তিনি ও তার ছয় সদস্যের ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পরিবার।  তবে পরে পাসপোর্টে সমস্যা নেই এমন কথা বলে এ ঘটনায় পরিবারটির কাছে ভুল স্বীকার করেছে ইজিজেট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
ঘটনার শিকার ৩৭ বছর বয়সী ব্রিটিশ-বাংলাদেশি নাগরিক সালেহ আহমদ রবিবার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চার সন্তানকে নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী সুলতানা বেগম শুক্রবার তুরস্কে ছুটি কাটাতে যাচ্ছিলেন। ফ্লাইটের আগমুহুর্তে বোর্ডিংপাস  ইস্যুর সময় ইজিজেট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ তার স্ত্রী সুলতানা বেগমের ' ভিসা সম্ভবত সঠিক নয়' অভিযোগ তুলে তার পাসপোর্ট আটকে দেয়।
সালেহ আহমদ আরও জানান, তার স্ত্রী সুলতানা বেগম (৩৭) একজন বাংলাদেশি নাগরিক। ১৯৮৮ সাল থেকে সুলতানা ব্রিটেনে বসবাস করছেন। তার পাসপোর্টে ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন ( ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে বসবাসের ভিসা) রয়েছে। আর এ পাসপোর্ট নিয়ে সুলতানা বহু দেশে আসা যাওয়া করেছেন।
সালেহ আহমদ অভিযোগ করেন, তার নিজের ও চার সন্তানের ব্রিটিশ পাসপোর্ট থাকায় তাদের বোর্ডিং পাস দিলেও সুলতানার বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেখেই আটকে দেন কর্তব্যরত নারী কর্মকর্তা। সুলতানার ভিসা সম্ভবত সঠিক নয় আখ্যা দিয়ে ইউকেবিএর সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন ঐ কর্মকর্তা। ভিসা আটকে  দেওয়ায় শেষ মুহুর্তে ফ্লাইটটি মিস করেন তারা। সালেহর অভিযোগ, বৈষম্য ও বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন তার স্ত্রী। ফ্লাইট মিস করার পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কাস্টমার সার্ভিস ডেস্কে। সেখানেও আড়াই ঘণ্টা অফিসের বাইরে ফ্লোরে বসে অপেক্ষা করতে হয় তাদের। পোহাতে হয় দুর্ভোগ। আড়াই ঘণ্টা পর তাদের জানানো হয়, তারা যেন বাড়ি ফিরে যান, পরবর্তীতে তাদের জানানো হবে।

ব্রিটিশ-বাংলাদেশি পরিবার সালেহ আহমেদ

পরে ইউকে বর্ডার এজেন্সি জানায়, সুলতানা বেগমের ভিসা সঠিক ছিল। এরপর ইজিজেট কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের পরবর্তীতে ফ্লাইটে নেওয়া হবে। কিন্তু তাদের সে ফ্লাইটের সময় জানানো হয়নি।
এ ঘটনায় ইজিজেটের একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টকে জানান, সুলতানা বেগমের ক্ষেত্রে ইজিজেটের কর্তব্যরত গ্রাউন্ডস কর্মকর্তা ইউকে বর্ডার এজেন্সির কাছে ভিসার সত্যতা যাচাইয়ে সাহায্য চান। ঐ যাত্রীর ভিসা সঠিক রয়েছে এবং আমরা তাদের বিনা ফিতে পরবর্তীতে দ্রুত অন্য ফ্লাইটে ট্রান্সফার করবো। এ ঘটনায় আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
এদিকে ইউকেবিএর পক্ষ থেকে ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়ার সময় যাত্রীদের ভিসা যাচাইয়ে ইউকেবিএর কাছ থেকে পুনঃপরীক্ষার করার জন্য কোনও নির্দেশনা নেই বলে জানিয়েছেন একজন মুখপাত্র।
বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বাসিন্দা সুলতানা বেগম জানান, এয়ারপোর্ট পর্যন্ত গিয়েও হলিডেতে যেতে না পারায় তার শিশু সন্তানরা দুঃখ পায় ও হতাশ হয়ে পড়ে।