১০ লাখ ভ্রমরের খাদ্য যোগাতে দুই ব্রিটিশ কৃষকের অনন্য উদ্যোগ

কৃষির আধুনিকায়নসহ নানা কারণে ধারাবাহিকভাবে কমছে ফসলের জন্য উপকারী পতঙ্গের সংখ্যা। বিপন্নতার মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা। কৃষি সুরক্ষায় তাই ফসলের জন্য উপকারী পতঙ্গ রক্ষায় উদ্যোগ নিয়েছেন যুক্তরাজ্যের দুই খামারী। ইংল্যান্ডের সাফোলকে শুকুরের খামারী দুই সহোদর মার্ক হায়ওয়ার্ড ও পল হায়ওয়ার্ড মিলে এই গ্রীষ্মে প্রায় ১০ লাখ ভ্রমরের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। ‘ওয়ান মিলিয়ন বিস’ নামে ভ্রমরদের খাওয়ানোর এই প্রকল্পটি যুক্তরাজ্যের ‘ফার্মিং অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাডভাইজরি গ্রুপ’ তত্ত্বাবধান করছে। ইতোমধ্যে ফ্যাক্টরি ফার্মিংয়ের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানো দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘কমপ্যাসন ইন ওয়াল্ড ফার্মিং’ ওই দুই খামারীকে সহায়তাও দিচ্ছে।
noname

ভ্রমরসহ অন্যান্য পতঙ্গের খাবারের যোগান দেওয়ার জন্য দুই ভাই তাদের আবাদী জমি ও খামারের পাশের জায়গা মিলিয়ে প্রায় ৩৩ হেক্টর জমিতে বনজ ফুলের বীজ বপন করেছেন। প্রায় ৮৩টি ফুটবল মাঠের সমান আয়তনের এই জমিতে ফুলের বীজ বপনের আগে তারা ২০১৭ সালের পরীক্ষামূলকভাবে খামারের পাশের জমিতে এই ফুল চাষ করেন। এতে দেখা যায়, ফাসিলিয়া, ক্লোভার ও ম্যালাওসহ মধু হয় এমন ফুলের গাছ থেকে প্রতি বর্গমিটার জমি থেকে ১২টি ভ্রমরের খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। এভাবে হিসাব করলে ৩৩ হেক্টর জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ ভ্রমরের খাবারের যোগান দেওয়া সম্ভব।

সাফোলকের ডিংলে ডেল পর্ক খামারের পাশের এসব জমিতে লাগানো বনজ ফুলগাছে ইতোমধ্যে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। পল হায়ওয়ার্ড বিকল্প ধারার সংবাদমাধ্যম পজিটিভ নিউজকে বলেন, ‘আধুনিক জীবন প্রকৃতিকে সংকটে ফেলেছে’। তিনি বলেন, ‘কৃষকরা চাষাবাদে বৈচিত্র আনার মাধ্যমে এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারেন। যদি আপনি তা করেন, তাহলে ভ্রমরসহ অন্যান্য পতঙ্গের পাশাপাশি পাখিসহ স্তন্যপায়ী প্রাণীরও ভারসাম্য তৈরি হবে’।

যুক্তরাজ্যের ভ্রমর সংরক্ষণ ট্রাস্টের মতে, যুক্তরাজ্যের পরাগবাহী পতঙ্গের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। ‘কুলুমস বম্বলেবিস’ ও ‘স্বল্প কেশীয় ভ্রমর’ নামে দুই প্রজাতির পতঙ্গকে ইতোমধ্যে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। হায়ওয়ার্ডস ভাইয়েরা প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে ইনস্ট্রাগ্রামে বিষয়গুলো তুলেও ধরছেন। এজন্য তারা ‘এ মিলিয়ন বিস অন ফার্ম’ নামে একটি ইনস্ট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্টও খুলেছেন।