টরেন্টোতে বন্দুক হামলায় দুইজন নিহত, হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ

কানাডার টরন্টোতে বন্দুকধারীর গুলিতে দুইজন নিহত হওয়ায় ঘটনায় হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করেছে পুলিশ।  হামলাকারীর নাম ফয়সাল হুসেইন। রবিবার রাতে গ্রিকটাউন এলাকায় ড্যানফোর্থ ও লোগান এভিনিউয়ে এই বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গুলিতে দুইজন নিহত ও শিশুসহ আরো ১৩ জন আহত হয়। পরে হামলাকারীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

Toronto-reuters-1

হামলাকারীর পরিবার দাবি করেছে, ফয়সাল হুসেইন দীর্ঘ ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। তার অনেক দিন ধরে নিরাময় অযোগ্য মনোব্যাধি ছিল।

সিবিসি অনলাইন এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে এক ব্যক্তিকে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে আসতে আসতেই হাতের পিস্তল উঁচিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। জোডি স্টেইনহাওয়ার নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী সিবিসি নিউজকে বলেন, গোলাগুলির ঘটনার সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ড্যানফোর্থের একটি রেস্তোরাঁয় ছিলেন। হঠাৎ করেই তারা ১০ থেকে ১৫টি বিকট শব্দ পান। প্রথমে তাদের মনে হয়েছিল, বোধ হয় বাজি ফোটানো হচ্ছে। দৌড়ে রেস্তোরাঁর পেছনে চলে যাওয়ার সময় তারা লোকজনের চিৎকার শুনতে পান। 

পুলিশ হামলাকারীকে গুলি ছুড়লে সেও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে কাছের একটি রাস্তায় হামলাকারীর গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ পাওয়া যায় বলে জানান টরন্টোর পুলিশ প্রধান মার্ক সন্ডার্স।

faisan-hussain-640x480

বন্দুক হামলায় নিহতের দুইজনের একজন ১০ বছরের বালিকা ও আরেক জন ১৮ বছরের নারী। গোলাগুলির ঘটনার পর টরন্টোর মেয়র জন টোরি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হওয়াই এ সমস্যার মূল কারণ বলে তিনি মনে করেন।

অন্টারিও স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট-এসআইইউ বলেছে, এই দুঃখজনক ঘটনার ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির কারণে তারা সন্দেহভাজন হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার হামলাকারীর ময়না তদন্ত সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে এসআইইউ।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, রবিবার হামলার কিছুক্ষণ পর গ্রিকটাউনের বোউদিন সড়কে হামলাকারীকে চিহ্নিত করে পুলিশ। পরে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার আগে একবার গোলাগুলি হয়। পরে প্রায় ১০০ মিটার দূরে তার লাশ পাওয়া যায়।

694940094001_5812771138001_5812766842001-vs

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবরে বলা হয়েছে, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের প্রতি হামলাকারী ফয়সাল হুসেইনের পরিবার গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা নিজেদের ছেলের ভূমিকাকে ‘ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছে। পরিবারটি বলেছে, তাদের ছেলে মারাত্মক মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। সে  নিরাময় অযোগ্য মনোব্যাধি ও জীবনের বেশিরভাগ সময় হতাশায় ভুগেছে। তারা আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগী ও এই শহরের জন্য আমাদের হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। এই ভয়ঙ্কর দুঃখজনক ঘটনায় আমরা সবাই শোক স্তব্ধ হয়ে পড়েছি’।

সাম্প্রতিক সময়ে টরন্টোতে অস্ত্রবাজি বেড়ে যাওয়ায় গত সপ্তাহে পুলিশের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যেসব এলাকায় এসব ঘটনা বেশি ঘটছে, সেখানে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত পালা করে টহল দেওয়ার জন্য ২০০ পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সূত্র: বিবিসি।