মধ্য আফ্রিকায় তিন রুশ সাংবাদিককে হত্যা

মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকে  তিন রুশ সাংবাদিককে হত্যা করেছে আততায়ীরা। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তাদের সংবাদ সংস্থাগুলো এ খবর নিশ্চিত করেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, অজ্ঞাত হামলাকারীদের অতর্কিত হামলায় এই তিনজন নিহত হন।

32edfd706b174f509370b691604c43b9_18

তিন সাংবাদিককে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রুশ অনলাইন নিউজ সংস্থা ইনভেস্টিগেশন কন্ট্রোল সেন্টার মঙ্গলবার এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, ওই তিন রিপোর্টার হলেন ওরহান ডিজহেমাল, অ্যালেক্সান্ডার রাস্তোরগুয়েভ ও কিরিল রাদচেনকো। তারা সেখানে একটি অ্যাসাইনমেন্টের দায়িত্ব পালন করছিলেন।  তারা  মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিকানে সশস্ত্র সংগঠন ওয়াগনারের কার্যক্রম সম্পর্কে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরির জন্য গিয়েছিলেন। সংগঠনটি বেসরকারি সামরিক ঠিকাদারের কাজ করে থাকে। 

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে রুশ সাংবাদিকদের উপস্থিতি সম্পর্কে সেখানকার রুশ দূতাবাসকে জানানো হয়নি। তবে বিবৃতি তাদের মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি।  সেখানে আসলে কী হয়েছিল তা জানার জন্য রুশ দূতাবাস স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কাজ করছে।

আফ্রিকান রিপাবলিকের সিবুত শহরের মেয়র হেনরি দেপেলে বলেন, সোমবার রাত ১০টার দিকে ওই সাংবাদিকদের হত্যা করা হয়। তবে হামলা থেকে তাদের ড্রাইভার বেঁচে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ড্রাইভারের ভাষ্যমতে, সিবুত থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দূরে থাকার সময় জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সশস্ত্র লোকজন বের হয়ে গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই ওই তিন সাংবাদিক নিহত হন।

নিহত তিন রুশ সাংবাদিক

ইনভেস্টিগেশন কন্ট্রোল সেন্টার জানিয়েছে, ওই সাংবাদিকরা শুক্রবার সেন্ট্রাল আফ্রিকা রিপাবলিকে যান। আর রবিবার সন্ধ্যায় তাদের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ করা সম্ভব হয়।

ইনভেস্টিগেশন কন্ট্রোল সেন্টারের অর্থায়নকারী রুশ ধনকুবের মিখাইল খোদোরকোভস্কি বলেন, ‘ওই কর্মীরা আমার একটি প্রকল্পে সহযোগিতার জন্য কাজ করছিলেন। তারা রাশিয়ায় বেসরকারি ভাড়াটে সৈনিকদের বিশেষ করে ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যদের বিষয়ে তদন্তটি করছিলেন’। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অন্যতম সমালোচক খোদোরকোভস্কি নিজের ওয়েবসাইটে বলেন, ‘এই সাহসী ব্যক্তিরা শুধু ডকুমেন্টরির তথ্য যোগাড় করার জন্যই প্রস্তুত ছিল না।  তারা পুরো বিষয়টি তাদের হাতের তালুতে আনতে চেয়েছিলেন।’   রাশিয়ার বাইরে বসবাসকারী খোদোরকোভস্কি গত বছরের নভেম্বরে রাশিয়ায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তের ক্ষেত্রে অর্থায়ন শুরু করেন। এরপর থেকে দোসিয়ার সেন্টার বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে দুর্নীতির খবর ফাঁস করতে থাকে।

ফ্রান্সের সাবেক উপনিবেশ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর একটি। ২০১৩ সাল থেকে দেশটি রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক সংকট সংঘাতে রুপ নেওয়ায় সেখানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের ১২ হাজার সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে এখন দেশটির বেশিরভাগ অংশই সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সূত্র: আল জাজিরা