আসামের নাগরিক তালিকায় নাম নেই সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর

আসামের খসড়া নাগরিক তালিকায় নেই প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সায়িদা আনোয়ারা তৈমুরের নাম। তিনিই প্রদেশের একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন। এই তালিকায় নাম উঠাতে দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।

 আনোয়ারা তৈমুর

চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা প্রকাশকে ঘিরে রবিবার থেকেই আসামে বিরাজ করছিলো থমথমে অবস্থা। আল-জাজিরা জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে আসামের রাজধানী গোহাটি থেকে রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়া চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিকত্ব নিবন্ধন তালিকা উন্মুক্ত করেন। প্রথম ধাপে ১ কোটি ৯০ লাখ অধিবাসীকে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। তবে বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার কারণে চূড়ান্ত তালিকায় সেখান থেকে দেড় লাখ অধিবাসীকে বাদ দেওয়ার কথা ছিল। তাদের পাশাপাশি প্রথম ধাপে তালিকায় স্থান না পাওয়া ১ কোটি ৩৯ লাখ অধিবাসীর ভাগ্যও নির্ধারিত হওয়ার দিন ছিল আজ। ২২ লাখ পৃষ্ঠার এই নাগরিক তালিকাকে ঘিরে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ যখন তুঙ্গে, তখন কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা জানিয়েছে, নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা ৩ কোটি ২৯ লাখ অধিবাসীর মধ্যে ২ কোটি ৮৯ লাখকে চূড়ান্ত নাগরিকত্ব তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। রয়টার্স নিবন্ধন-সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৭ জন তালিকায় স্থান পায়নি।

আনোয়ারা তৈমুর বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক যে আমার নাম তালিকায় নেই। আমি আগস্টের শেষ সপ্তাহে আসামে ফিরে গিয়ে আমার ও পরিবারের নাম ওঠানোর চেষ্টা করবো।

১৯৮০ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৮১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপালন করেন আনোয়ারা। বর্তমানে তিনি অসুস্থ অবস্থায় ছেলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া বসবাস করছেন। তিনি জানান, এক আত্মীয়কে অনুরোধ করেছেন যেন তার হয়ে এনআরসি তালিকায় নাম ওঠানোর আবেদন করেন। তবে সেটা সম্ভব হয়নি।

গুহাটির এনআরসি কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কাছে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর পর্যাপ্ত তথ্য ছিলো না তাই তাকে বা তার পরিবারকে তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয়নি। তারা আবেদন করেছিলো কি না সেটাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

১৯৮৮ সালে রাজ্যসভা সদস্য ছিলেন তৈমুর। ১৯৭২, ১৯৭৮, ১৯৮৩ ও ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১১ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করেন এই রাজনীতিবিদ। যোগ দেন এআইইউডিএফ এ। দলটির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, তারাও তালিকায় অন্তর্ভূক্ত না হওয়ার বিষয়টি শুনেছেন। তিনি বলেন, আমরা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানতে পেরেছি যে সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেই। এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট ফখরুদ্দিন আলি’র ভাইপোর নামও তালিকায় নেই।’

মহাসচিব দাবি করেন, এই তালিকায় অনেক ভুল আছে। তিনি শিগগিরই এই তালিকা তৈরি প্রক্রিয়ার সমন্বয়ক  প্রতিক হাজেলার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন।