কানাডায় চিকিৎসা কর্মসূচি বন্ধ করলো সৌদি আরব

কানাডায় সব ধরনের মেডিকেল চিকিৎসা কর্মসূচি বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব। এমনকি সেখান চিকিৎসাধীন সৌদি নাগরিকদের কানাডার বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার বিষয়টিও সমন্বয় করছে দেশটি। সৌদি আরবে নারী ও মানবাধিকার কর্মীদের আটকের প্রতিবাদ করার সম্পর্ক ছিন্ন করার ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো। এর আগে কানাডার সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি বাতিল ও কূটনীতিককে বহিষ্কারও করে সৌদি আরব। এমনকি সৌদি আরব থেকে সরাসরি কানাডাগামী বিমান চলাচলও বন্ধ করে দেয় দেশি।  

8347e86570264d4a918cc0cc9fb1ce26

গত ১ আগস্ট ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ জানিয়েছিল, সৌদি আরব কয়েকজন অধিকারকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে ছিলেন সৌদি আরবের নারী মুক্তি আন্দোলনের প্রখ্যাত নেত্রী সামার বাদাউই। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার অন্য অধিকারকর্মীদের পাশাপাশি সামার বাদুউইয়ের ‘অবিলম্বে মুক্তি’ দাবি করেছিল কানাডা। কানাডার এই ‘অবিলম্বে মুক্তির দাবি’ ভালো লাগেনি সৌদি আরবের। কানাডার আহ্বানের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরব বলেছিল, ‘কানাডার বক্তব্য সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খোলাখুলি হস্তক্ষেপ, যা আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও বিধির খেলাপ।’ এরপরই কানাডার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে আরব দেশটি।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় নিযুক্ত সৌদি স্বাস্থ্য দূত ডা. ফাহাদ বিন ইব্রাহিম আল তামিমির বরাত দিয়ে সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদি নাগরিকদের জন্য কানাডায় চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করতে যাচ্ছে তারা। এখন থেকে চিকিৎসার জন্য কানাডায় কোনও রোগী পাঠাবে না দেশটি। এমনকি যেসব রোগী এখন সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদেরও অন্য দেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। অধিকারকর্মীদের আটকের প্রতিবাদ জানানোয় সৌদি আরব কানাডার বিরুদ্ধে এসব ব্যবস্থা নিচ্ছে।

কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড সৌদি আরবের এসব প্রতিক্রিয়ায় বিষয়ে বলেন, বিশ্বের যেখানেই হোক না কেন কানাডা মানবাধিকার, নারী স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এসব মূল্যবোধকে সমর্থন করতে কখনওই দ্বিধান্বিত হবো না। আমরা বিশ্বাস করি, এই আলোচনা আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য মারাত্মক হবে।’

২০১৮ সালের মে মাস হতে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকজন নারী অধিকারকর্মীকে গ্রেফতার করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী গাড়ি চালানোর অনুমতি ও পুরুষ অভিভাবকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রচারণায় যুক্ত ছিলেন। মে মাসে কর্তৃপক্ষ নারী অধিকারকর্মী এমান আল-নাফজান, লুজাইন আল-হাতলুল, আজিজা আল-ইউসেফ, আয়শা আল-মানিয়ে, ইব্রাহিম মোদেইমাহ ও মোহাম্মদ আল-রাবেয়াকে গ্রেফতার করে। কর্তৃপক্ষ জানায়, বিদেশি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশ ও বিদেশি শত্রুদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার মতো সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডের জন্য সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলাকালে আরও গ্রেফতার করা হতে পারে।  সূত্র: রয়টার্স।