জনসমক্ষে আসছেন ব্র্যাডলি ম্যানিং

চলতি বছর যুক্তরাজ্যে কেমব্রিজ অ্যানালাইটিকা নিয়ে কথা বলবেন সাবেক গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক ব্র্যাডলি ম্যানিং। দুনিয়া জুড়ে সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ সামরিক নথি ফাঁস করে কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন ম্যানিং। এরপর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে কথা বলতে আসছেন তিনি।

551156757ইরাকে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করার সময় উইকিলিকসের কাছে কয়েক লাখ মার্কিন সামরিক গোপন নথি ফাঁস করে দেন তখনকার ব্রাডলি ম্যানিং। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে সাত লাখ নথি ফাঁসের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হলে হরমোন থেরাপির পর চেলসি ম্যানিং নামে নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বিচারে তাকে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের মে মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তৃতীয় লিঙ্গের সমতা নিয়ে সরব ছিলেন ম্যানিং।

এই তথ্য ফাসঁকারীকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান, ডাটা ইকোনোমি ও জননীতিতে অ্যালগোরিদম নিয়ে কথা বলতে বলা হয়েছে। এছাড়া ৮ কোটি ৭০ লাখ ফেসবুক একাউন্ট থেকে তথ্য নিয়ে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহার করার দায়ে অভিযুক্ত কেমব্রিজ অ্যানালাইটিকা ফার্ম ও পানামা পেপার্স নিয়েও কথা বলবেন।

ইনস্টিটিউট অব কনটেম্পোরি আর্টস ইন লন্ডনের(আইসিএ) পরিচালক স্টিফেন কালমারের আমন্ত্রণে ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ম্যানিং। স্টিফেন এর আগে নিউ ইয়র্কের আটিস্ট স্পেসে কর্মরত ছিলেন। ম্যানিংয়ের সম্মানে ডিনার আয়োজন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি খুবই উৎসাহী ও উত্তেজিত।’ 

স্টিফেন বলেন, আইসিএ’কে তিনি প্রকৃত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছন। তিনি বলেন, এটা সবসময়ই সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠন ছিলো। সবসময়ই এই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা সংস্কৃতিকে সামাজিক ও রাজনৈতিক অর্থে যুক্ত করতে চাই। আমি আশা করি একজন ব্যক্তির নিজের সাহস, ইচ্ছা ও স্বপ্ন দিয়ে বিশ্ব পরির্তনের চেষ্টাকে তুলে ধরতে পারবো। চেলসিকে লন্ডনে আমন্ত্রণ জানাতে পেরে আমরা খুবই খুশি।

স্টিফেন কালমার বলেন, যুদ্ধ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বাণিজ্যিক সফটওয়ারের ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলতে চেয়েছেন ম্যানিং।

মুক্তির পরও অনেক চাপ ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছেন বলে জানান ম্যানিং। তবে নিজের কাজের জন্য কখনোই ক্ষমা চাননি বা দুঃখ প্রকাশ করেননি।

ম্যানিং বলেন, ‘এই কাজটি করার আর কোনও উপায়ই ছিলো না। আমি হয়তো অনেক ভুল করি। কিন্তু তার জন্য দুঃখ করি না। এখান থেকেই আমি শিখি।’ তিনি বলেন, কারাবাসে সময়টা তার ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে কিন্তু বিষয়টি তার কাছে এখনও স্পষ্ট না।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার হস্তক্ষেপের কারণে ম্যানিংয়ের সাজা কমে আসে এবং ২০১৭ সালে মুক্তি পান। একবছরের মধ্যেই ডেমোক্রেট প্রার্থী হিসেবে ম্যারিল্যান্ডে সিনেট নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।