কেরালায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯, রেড অ্যালার্ট জারি

ভারতের কেরালায় গত ৮ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ৭১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এ বন্যায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উপদ্রুত এলাকায় গৃহহীন হয়ে পড়েছেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। গৃহহীন দেড় লাখ মানুষ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। স্কুল, কলেজ, সরকারি দফতর আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

nonameবৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ রেলওয়ের পরিষেবা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কোচি মোট্রো পরিষেবাও।

বন্যার ফলে চারদিনের জন্য বন্ধ রয়েছে কোচি বিমানবন্দর। বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সেখানকার বিমান পরিষেবা। রানওয়ে পুরোপুরি পানির নিচে। ফলে কোনও বিমান উঠানামা করতে পারছে না। বেশকিছু বিমানকে কোঝিকোড় ও তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর দিয়ে অবতরণ করানো হচ্ছে। তবে তা সংখ্যায় বেশ কম। রেল লাইনের অবস্থাও একই রকম।

কোচি বিমানবন্দর পেরিয়ার নদীর তীরের কাছে অবস্থিত। ফলে নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে দিয়ে বওয়ায়, সেই রেশ এসে পড়েছে বিমানবন্দরে। ইদ্দুকি বাঁধের স্ল‌ুইস গেট খুলে দেওয়ায় পানির স্তর আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বানভাসি মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। যারা নিজেদের জমি ও ঘর দুটোই হারিয়েছেন তাদের মোট ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে ৬ লাখ টাকা জমি কেনার এবং ৪ লক্ষ টাকা বাড়ি বানানোর। বন্যার্তদের মধ্যে যাদের গুরুত্বপূর্ণ নথি হারিয়ে গিয়েছে তাদের বিনামূল্যে নথি তৈরির আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

ত্রাণশিবিরের বাইরে রাজ্যের স্কুলগুলোতেও আশ্রয় নিয়েছেন বন্যার্তরা। বৃহস্পতিবারও বৃষ্টি হয়েছে। এদিন দুর্গত এলাকা থেকে অন্তত সাতজনকে উদ্ধার করেছে সেনাসদস্যরা। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যরাও উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়েছে।

টানা বৃষ্টির ফলে অতিরিক্ত পানি বাঁধের ওপর চাপ তৈরি করায় কর্তৃপক্ষ ৩০টি জলাধার খুলে দিতে বাধ্য হয়। এর আগে সংলগ্ন এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু বাঁধ খুলে দেওয়ায় বন্যা ও ভূমিধসের কবলে পড়ে বিস্তৃত এলাকা।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র সঙ্গে কথা বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দলীয়ভাবেও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কংগ্রেস। সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।