এশিয়ান গেমস ঘিরে ইন্দোনেশিয়ায় পুলিশি অভিযানে নিহত ৩১: অ্যামনেস্টি

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসর এশিয়ান গেমস এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ায়। রাজধানী জাকার্তা ও দক্ষিণ সুমাত্রার শহর পালেমবাংয়ে আয়োজিত এই ক্রীড়া অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে নিরাপত্তা অভিযান চালাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, জুলাই থেকে শুরু হওয়া স্বাগতিক শহর পরিচ্ছন্ন করার এই অভিযানে ৩১ জন ‘ছোটখাট অপরাধী’ নিহত হয়েছেন। আর গত জানুয়ারি থেকে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ৭৭ জন। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, পুলিশকে বাধা দেওয়ায় নিহতের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ইন্দোনেশিয়ার পুলিশের এ সংক্রান্ত নীতির বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী। ফাইল ছবি১৮ আগস্ট শনিবার শুরু হচ্ছে এশিয়ান গেমসের ১৮তম আসর। দুই সপ্তাহের এই আসরে এশিয়া মহাদেশের প্রায় ১৭ হাজার ক্রীড়াবিদ অংশ নেবেন। আগামী ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা এই ক্রীড়া আসরের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য মোতায়েন করেছে ইন্দোনেশিয়া।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র ইন্দোনেশিয়ান সার্ভিসের খবরে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের নির্দেশের পর স্বাগতিক শহর পরিচ্ছন্ন করার অভিযান শুরু হয়। ওই সময়ে শীর্ষ কর্মকর্তারা তাদের অধীনস্তদের বলেন, ‘কঠোর ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করবেন না।’

অ্যামনেস্টি ইন্দোনেশিয়ার প্রধান উসমান হামিদ বলেন, সর্বাত্মক নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর বদলে আমরা দেখেছি পুলিশ গুলি চালাচ্ছে আর বিন্দুমাত্র জবাবদিহিতা ছাড়াই মানুষকে মেরে ফেলছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক একটি ক্রীড়া আসরের স্বাগতিক হওয়ার মূল্য কোনওভাবেই মানবাধিকার হরণ হতে পারে না।

পুলিশি অভিযানে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হতাহতের ঘটনা ঘটে জুলাইয়ের প্রথম দিকে। বৃহত্তর জাকার্তা এলাকায় ওই সময়ে ১১ জনকে হত্যা ও অপর ৪১ জনের পায়ে গুলি করা হয়।

ক্রীড়া আসরের সময়ে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাজার হাজার মানুষ গ্রেফতার ও শত শত মানুষকে আটক রাখা হয়েছে। দেশটির পুলিশ প্রধান জেনারেল টিটো কার্নাভিয়ান-ও সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। জুলাইয়ের শেষ দিকে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত মাসে আমি আমার কর্মকর্তাদের সব পকেটমার ও ব্যাগটানা পার্টির নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দেওয়ার নির্দেশ দেই। তার ভাষায়, ‘যদি তারা পাল্টা লড়াই চালায়, তাহলে দ্বিধা করবেন না। তাদের শেষ করে দিন।’

ক্রীড়া আসর শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত পুলিশের এই অভিযান চলবে। বিবিসি ইন্দোনেশিয়ার সাংবাদিক হায়দার আফান জানিয়েছেন, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষই জাকার্তার রাস্তায় চলমান এই অভিযানের বিরোধিতা করছেন না।

রাজধানীর পুরনো শহর এলাকার এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, পুলিশের পদক্ষেপকে আমি সমর্থন করি, কেননা তারা মানুষের জন্য খুবই বিপদজনক। সূত্র: বিবিসি।