চীনা অর্থায়নে ব্যয়বহুল প্রকল্প বাতিল করেছে মালয়েশিয়া: মাহাথির

চীনা অর্থায়নে মাল্টিবিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে মালয়েশিয়া। এসব প্রকল্প এখন অপ্রয়োজনীয় ও এতে দেশটির পিঠে অসহনীয় ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হবে বলেও মনে করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। মঙ্গলবার বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মাহাথির।

চীনে সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির মোহাম্মদ

মাহাথির মালয়েশিয় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী লি কিকিয়াং প্রকল্পগুলো বাতিলের কারণ বুঝতে পেরেছেন আর তা মেনেও নিয়েছেন। তবে এর আগে বিনিয়োগের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে চীন দাবি করেছিল, এতে উভয়পক্ষেরই বাস্তবিক লাভ হবে।

দুই হাজার কোটি ডলার ব্যয়ে মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলীয় রেলপথ ও ২৩০ কোটি ডলার ব্যয়ে দুটি জ্বালানি পাইপলাইন নির্মাণের দুটি প্রকল্প নিয়ে পুনরায় আলোচনা ইতোমধ্যে স্থগিত করেছে মালয়েশিয়া। মাহাথির বলেন, ‘এখানে অনেক বেশি অর্থ খরচ করা হবে যার সামর্থ আমাদের নেই। এছাড়া এই মুহূর্তে মালয়েশিয়ার জন্য এসব প্রকল্পের দরকারও নেই।’

মাহাথির বলেন, প্রয়োজন পড়লে আবারও এসব প্রকল্প চালু করা যেতে পারে। তবে এখন মালয়েশিয়ার প্রধান লক্ষ্য হলো জাতীয় ঋণ কমানো। তিনি বলেন, ‘আমাদের যত ঋণ আছে, সতর্ক না হলে আমরা দেউলিয়া হয়ে যাবো।’ সংবাদ সম্মেলনে নিজের পূর্বসুরী নাজিব রাজাকের ‘বোকামি’কে দোষারোপ করেন মাহাথির। তিনি বলেন, নিজ থেকে এসব প্রকল্প থেকে বের হয়ে আসায় মালয়েশিয়াকে এখনও প্রকৃত জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া এসব প্রকল্পের জন্য দেওয়া অর্থ কোথায় গেছে তাও খুঁজে বের করা প্রয়োজন। বেইজিং সফর শুরুর আগেও মাহাথির বলেছিলেন, মালয়েশিয়ার জন্য এসব প্রকল্প দরকার নেই।

চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ পরিকল্পনার আওতায় এশিয়াজুড়ে বন্দর, রেলপথ ও বাণিজ্য সংক্রান্ত অবকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে। আর এসব প্রকল্পের বেশিরভাগই করা হচ্ছে চীনের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের দেওয়া ঋণের অর্থে ও চীনা কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে। থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশে অভিযোগ উঠেছে, এই পরিকল্পনার প্রকল্পগুলো অপ্রয়োজনীয় ও বেশি ব্যয়বহুল। স্থানীয় কোম্পানিগুলোকে এসব প্রকল্পে কাজ করার তেমন কোনও সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি এতে দুর্নীতিসহ অর্থ আত্মসাতেরও অনেক সুযোগ রাখা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মাহাথির বলেন, চীন সফরকালে তিনি তার দেশের পলতাক বিনিয়োগকারী লো তায়েক ঝো’র বিষয়টি উত্থাপন করেননি। তিনি বলেন, লো সম্ভবত চীনে আত্মগোপন করে আছেন কিন্তু তার কোনও প্রমাণ হাতে নেই। মালয়েশিয়ার ওয়ানএমডিবি বিনিয়োগ তহবিলের অর্থ চুরি ও বিদেশে পাচারের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের অন্যতম সহযোগী হলেন লো ঝো।