ইয়েমেন যুদ্ধ শিশুদের জন্য জীবদ্দশার নরক: ইউনিসেফ

ইয়েমেন যুদ্ধকে সেখানকার শিশুদের জন্য ‘জীবদ্দশার নরক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের ইয়েমেন প্রতিনিধি মেরিক্সেল রেলানো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইয়েমেন পরিস্থিতি নিয়ে এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানান তিনি।

ইয়েমেনি শিশু
২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুথিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক শিশু রয়েছে।

রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইয়েমেনে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি মেরিক্সেল রেলানো জানান, ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি শিশু খাদ্য ঘাটতিতে পড়ার, রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার, বাস্তুচ্যুত হওয়ার ও মৌলিক সামাজিক সেবাজনিত সংকটে পড়ার হুমকিতে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধরত পরিস্থিতি ও চাকরিবিহীন অবস্থায় থাকা পরিবারগুলোর কোনও আয়-উপার্জন নেই। সর্বনাশা পরিস্থিতিতে আছে তারা। দেশটির ১৮ লাখ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে। তাদের মধ্যে প্রায় ৪ লাখ শিশু মারাত্মক অবস্থায় রয়েছে। নিজেদের জীবন বাঁচাতে প্রতিদিন লড়াই করছে তারা।’ তার মতে, 'সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি ইয়েমেনকে সেখানকার শিশুদের কাছে ‘জীবদ্দশার নরকে’ পরিণত করেছে।'

রেলানো জানান, ২০১৮ সালের শুরু থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী ২ লাখ ৪৪ হাজার চরম অপুষ্টিতে থাকা শিশুকে থেরাপিউটিক চিকিৎসা দিয়েছে ইউনিসেফ। আর পাঁচ বছরের কম বয়সী তিন লাখ ১৭ হাজার শিশুকে দেওয়া হয়েছে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট চিকিৎসা।