সিরিয়ার আকাশসীমা থেকে রুশ সামরিক বিমান উধাও

১৪ জন আরোহী নিয়ে রাশিয়ার একটি সামরিক বিমান সিরিয়ার আকাশসীমা থেকে উধাও হয়ে গেছে। স্থানীয় সময় সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে রুশ বিমানটি রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ইলিউশিন-২০ বিমানটি সিরিয়ার উপকূল থেকে রাশিয়ার হামেইমিম বিমানঘাঁটির দিকে যাচ্ছিলো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি জানিয়েছে। রুশ সংবাদমাধ্যমে এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলি ও ফরাসি বিমান হামলাকে দায়ী করা হলেও দেশ দুটির কর্তৃপক্ষ তা নাকচ করে দিয়েছে।

ইলিউশিন-২০ বিমান
সিরিয়ায় ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে তিন লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সিরিয়ার চলমান সংকট নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বিপরীতধর্মী। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য তারা আসাদ সরকারের বিদ্রোহ ঘোষণাকারী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে এবং ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। তবে আসাদ সরকারের দাবি, আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে যুক্তরাষ্ট্র মূলত বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করতে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। আর রাশিয়া বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। আসাদ সরকারের সমর্থনে রাশিয়াও আইএস ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাচ্ছে। সিরিয়া সংকটকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র প্রক্সি যুদ্ধে মেতে উঠেছে বলে অনেকেই মনে করেন।

ইলিউশিন-২০ বিমান হচ্ছে রুশ বাহিনীর গোয়েন্দা বিমান, যেটিতে বিশাল আকারের অ্যান্টেনা, ইনফারেড ও অপটিক্যাল সেন্সর রয়েছে। এর সাইড লুকিং এয়ারবোর্ন রাডার ও স্যাটেলাইট সিস্টেমের সাহায্যে সিরিয়ার আকাশের দিকে নজর রাখে রুশ সেনারা। রুশ বার্তা সংস্থা তাস-এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সোমবার চারটি ইসরায়েলি বিমান যখন সিরিয়ার লাটাকিয়ায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা চালাচ্ছিল, তখনই রুশ সামরিক বিমানটি নিখোঁজ হয়। একই সময়ে ওই অঞ্চলে ফরাসি যুদ্ধবিমান থেকে রকেট ছোড়ার দৃশ্য শনাক্ত করে রাশিয়ার এয়ার কন্ট্রোল রাডার সিস্টেম। তবে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ ঘটনায় ফরাসি বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন সেনা মুখপাত্র। আর লাটাকিয়ায় অভিযান চালানো নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়নি।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি এফ-১৬ বিমান থেকে হামলার সময় হামেইমিম বিমান ঘাঁটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার সামরিক বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। এ সময় বিমানটি সিরিয়ার উপকূল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে ছিল। বিমানের আরোহীদের পরিণতি কী হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। এ ঘটনায় উদ্ধার ও অনুসন্ধান তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।