আবার বাড়লো ভারতে গ্রেফতার ৫ ‘শহুরে নকশালের’ বন্দিত্বের মেয়াদ

সন্ত্রাসবাদ ও মাওবাদী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ ভারতীয় অ্যাকটিভিস্টের গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আবারও বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একইদিন ওই পাঁচ অ্যাকটিভিস্টের অবিলম্বে মুক্তি চেয়ে রমিলা থাপার ও অপর চারজনের করা আবেদনেরও শুনানি করবে সর্বোচ্চ আদালত। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে। এর আগে, পুলিশ কর্তৃক ‘আরবান নকশাল’ আখ্যা পাওয়া ওই পাঁচ অ্যাকটিভিস্টের গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর করা হয়েছিল।noname

নকশালবাড়ী ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলীয় দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি মহকুমার একটি প্রত্যন্ত থানা। ষাটের দশকের শেষ দিকে সেখান থেকে মাওবাদী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তবে নকশালপন্থী আন্দোলন সত্তরের দশকের প্রথমার্ধ্ব থেকেই গতি হারাতে শুরু করেছিল। নকশালবাড়ির ঘটনার পর রাজ্যের ছাত্রদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছাত্র ফেডারেশনের ছাতা ছেড়ে কৃষকবিদ্রোহের সমর্থনে নেমে পড়েছিল। সেই সময় গড়ে ওঠা পাল্টা ছাত্র ফেডারেশনের ৯০ শতাংশই ছিল নগর ও শহরাঞ্চলের বাসিন্দা, যাদের পরিচিতি ছিল আরবান নকশাল। এবার গ্রেফতার হওয়া ওই পাঁচ ভারতীয় অ্যাকটিভিস্টের বিরুদ্ধে মাওবাদী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলে তাদের ‘আরবান নকশাল’ আখ্যা দিয়েছে ভারতের পুলিশ।
ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার, দুই অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়েক ও দেবকী জৈন, সমাজতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সতীশ দেশপান্ডে ও মানবাধিকার আইনজীবী মাজা দারুওয়ালা ওই ৫ জনের গ্রেফতারের ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছেন। তাদের অবিলম্বে মু্ক্তির দাবিও করেছেন তারা। বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ আবেদনেরও চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানিয়েছে আদালত। ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের ভাষ্য, প্রতিটি অপরাধমূলক তদন্ত হয় অভিযোগের ভিত্তিতে। অভিযোগের সমর্থনে তথ্য-প্রমাণ কিছু আছে কিনা, তা দেখতে হবে। কোনও বড়সড় গাফিলতি, ত্রুটি হয়ে থাকলে তারা এই মামলায় বিশেষ তদন্ত দলকে (সিট) দিয়ে তদন্তের আবেদন খতিয়ে দেখবে বলেও জানায় বেঞ্চ।
ওই অ্যাকটিভিস্টদের গ্রেফতারকারী মহারাষ্ট্র পুলিশের পক্ষ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, অ্যাকটিভিস্টদের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে পেশ করা পিটিশন সুপ্রিম কোর্টের গ্রহণ করা উচিত হয়নি। সর্বোচ্চ আদালত নয়, বরং সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটেরই ওই ৫ জনের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য থাকলে তা খতিয়ে দেখা উচিত ছিল। অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সুপ্রিম কোর্টে মীমাংসা হয়ে গেলে গ্রেফতারকৃত অভিযুক্তরা যাতে একইসঙ্গে বিচার বিভাগের অন্য কোনও মঞ্চে একই ইস্যুতে রেহাই না পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।