রাখাইনে সেনা অভিযানকে ‘গণহত্যা’ বললো কানাডা

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘গণহত্যা’ বললো কানাডা। বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে সর্বসম্মতভাবে এই বিল পাস হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

01eac7b18d7946d8af70f63e193bd639_18গত বছরের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ওই অভিযানে জাতিগত নিধনযজ্ঞের আলামত পেয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ মিয়ানমারের মানবাধিকার নিয়ে এক তদন্ত প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে। মিয়ানমার সরকার বারবারই দাবি করে এসেছে যে নিরাপত্তার স্বার্থে এই অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। কোনও নিধনযজ্ঞ চালানো হয়নি। তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রত্যাখ্যানের মাত্রায় তারা হতবাক। সামরিক অভিযানে কখনোই হত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, শিশু নিপীড়ন ও গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার হাউস অব কমনসে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেন কানাডীয় আইনপ্রণেতারা। তখন তারা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধকে হত্যাযজ্ঞ বলে রায় দেন।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, আমি বলতে চাই যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কতটা ভয়াবহ ছিল। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে চেষ্টা করছি যেন দোষীদের বিচারের আওতায় আনা যায়। আজকে সর্বসম্মত ভোট তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

গত মাসে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানায়, রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে সেনাবাহিনী জড়িত রয়েছে। তারা বলেছিলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যায় ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকায় মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে বেসামরিক কর্তৃপক্ষও এই নিধনযজ্ঞে ইন্ধন জুগিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার আবারও একই আহ্বান জানালো জাতিসংঘ।

১৮ মাস ধরে তৈরি করা জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞে প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিরাপত্তা হুমকি বিবেচনা করে সরকারি বাহিনীর পদক্ষেপ খুবই অযৌক্তিক ছিল।

তবে মিয়ানমার বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।