তাইওয়ানের কাছে মার্কিন সমরাস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনায় ক্ষোভ চীনের

যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের কাছে সমরাস্ত্র বিক্রির যে পরিকল্পনা করছে তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন। বেইজিং বলেছে, তাইওয়ানের কাছে অস্ত্র বিক্রি করলে তা হবে চীনের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন। এতে করে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মঙ্গলবার এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ইস্যুতে নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং।

13চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, চীন এরইমধ্যে এ বিষয়ে ওয়াশিংটনের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাইওয়ানের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের কঠোর আপত্তি রয়েছে। চীন মার্কিন কর্তৃপক্ষকে এ পরিকল্পনা বাতিলের আহ্বান জানাচ্ছে।

এর আগে সোমবার তাইওয়ানের কাছে ৩৩ কোটি ডলারের সামরিক বিমানের যন্ত্রাংশ বিক্রির অনুমোদন দেয় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ৭৭৫ কোটি ৩০ হাজার টাকা। এ অনুমোদনের বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেস আপত্তি করার জন্য ৩০ দিন সময় পাবে। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আপত্তি না উঠলে এসব যন্ত্রাংশ পেতে তাইওয়ানের আর কোনো সমস্যা হবে না। এসব যন্ত্রাংশ তাইওয়ান এফ-১৬, সি-১৩০ এবং এফ-৫ বিমানে ব্যবহার করবে। 

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের ডিফেন্স সিকিউরিটি কোঅপারেশন এজেন্সি’র পৃথক এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, তাইওয়ানের কাছে এফ-১৬ জঙ্গিবিমান, সি-১৩০, এফ-৫, আইডিএফ জঙ্গিবিমান, বিভিন্ন আকাশযান সিস্টেম ও সাবসিস্টেম সরবরাহ করা হবে। এটি সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়কারী দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতার উন্নয়ন ঘটাবে; যা মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় অবদান রাখবে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের দাবি, তাইওয়ানকে বিপুল অঙ্কের এসব সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করা হলেও তা ওই অঞ্চলের সামরিক ভারসাম্যকে বদলে দেবে না। বরং দেশটির ‘প্রতিরক্ষা ও বিমানবহর’ বজায় রাখতে এর প্রয়োজন রয়েছে। পেন্টাগনের তরফে মার্কিন কংগ্রেসকেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

মার্কিন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের দফতর বলেছে, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত চীনকে ক্ষুব্ধ করে তুলবে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। কেননা, তাইওয়ানকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে বেইজিং। আর এমন সময়ে এই সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির খবর এলো যখন দৃশ্যত চীনের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধ জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এরইমধ্যে একাধিক দফায় বাড়ানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানির ওপর শুল্কের পরিমাণ। সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে।