নাজিব রাজাকের স্ত্রীকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ

মালয়েশিয়ার ওয়ানএমডিবি দুর্নীতির অভিযোগের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের স্ত্রী রোসমাহ মানসুরকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দেশটির দুর্নীতিদমন সংস্থা। বুধবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হলে রোসমাহ সংস্থার অফিসে হাজির হন। এর আগে গত জুন মাসে তাকে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের স্ত্রী রোসমাহ মানসুর

মালয়েশিয়ার পুলিশ জানিয়েছে, নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের আরও ২১টি অভিযোগ আনা হবে। ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে নিজের অ্যাকাউন্টে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার নেওয়ার ঘটনাতেই এই নতুন অভিযোগ গঠন করা হবে। পুলিশ বলছে, এসব অভিযোগের মধ্যে ৯টিতে অবৈধভাবে অর্থ গ্রহণ, পাঁচটিতে অবৈধভাবে ব্যবহার ও সাতটিতে এগুলো হস্তান্তরের ঘটনা রয়েছে। নাজিব অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরই মধ্যে তার স্ত্রীকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো।   

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় রোসমেহ মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশন-এমএসিসি’র সদর দফতরে উপস্থিত হন। ওই সময় তার সঙ্গে আইনজীবীরা ছিলেন আর তাকে গম্ভীর মনে হচ্ছিল। 

গত সপ্তাহে এমএসিসি’র এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ওয়ানএমডিবি বিষয়ে কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হতে পারে। রোসমাহর বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হবে কিনা জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি তা নাকচ করছি না।’

৬৬ বছর বয়সী রোসমাহ মালয়েশিয়ার খুবই পরিচিত মুখ। তাকে প্রায়ই সগর্বে নিজের হারমেস বিরকিন হ্যান্ডব্যাগ ও ভারী গয়না পরে জনসম্মুখে আসতে দেখা যায়। এছাড়া বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ ডলার খরচ করে শপিং করার জন্যও তিনি বেশ আলোচিত। তার এমন জাঁকজমকপূর্ণ জীবন-যাপনের বিষয়টি সবার নজরে আসে। স্বামীর সরকারি বেতনে কিভাবে এমন বিলাসী জীবন যাপন করা যায় তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন।

গত ৯ মে নির্বাচনে নাজিব সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের কাছে হেরে যাওয়ার পর এই দম্পতির ওই বিলাসী জগতটি উল্টে যায়। মাহাথির দায়িত্ব নেওয়ার পরই ওয়ানএমডিবি তহবিলের অর্থ তছরুপের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেন।  মার্কিন বিচার বিভাগ অভিযোগ করেছে, ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে ৪৫০ কোটি ডলারের বেশি অর্থ তছরুপ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮ কোটি ডলার নেওয়া হয়েছে নাজিবের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে। নাজিব ও রোসমাহ দুইজনের বিরুদ্ধেই দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা আছে। 

নাজিব রাজাক ক্ষমতায় থাকা অবস্থাতেই তার বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। তবে সৌদি সূত্রের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, ২০১৩ সালের নির্বাচনে জিততে মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার দিয়েছিল সৌদি আরব। মূলত দেশটিতে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব ঠেকাতেই তাকে এ অর্থ দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন সৌদি বাদশাহ আব্দুল্লাহ অর্থ প্রদানের বিষয়টি অনুমোদন করেছিলেন। সূত্র: রয়টার্স।