ইন্দোনেশিয়ায় শুক্রবারের ভূমিকম্প ও সুনামিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার উপকূলে সন্ধান মিলেছে বহু মরদেহের। ভূমিকম্প-সুনামির ধাক্কায় আহ্ত হয়েছে ৩৫০ জনেরও বেশি মানুষ। লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। উপদ্রুত এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার কার্যক্রম। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
জাকার্তায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি)-এর মুখপাত্র সুতোপো পুরো নাগ্রহ বলেন, সুনামির ফলে উপকূলে বহু মরদেহের সন্ধান মিলেছে। প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
২৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ইন্দোনেশিয়ার সুলাবেসি দ্বীপে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। কম্পনের পর ছোট্ট শহর পালুতে আছড়ে পড়ে প্রলয়ঙ্করী সুনামির ঢেউ। সুউচ্চ ঢেউ লণ্ডভণ্ড করে দেয় উপকূলীয় এলাকা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল ৫ টার দিকে সুলাবেসি দ্বীপে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ওই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর আগে অঞ্চলটিতে মাঝারি মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। দ্বিতীয় কম্পনের পর শুরু হয় সুনামির ভয়াবহতা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, লোকজন চিৎকার করছে। আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু স্থাপনা।
ভূমিকম্পের পরপরই সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। পরে এক ঘণ্টার মধ্যেই তা প্রত্যাহার করা হয়। সতর্কতা প্রত্যাহারের পরই সুনামি আছড়ে পড়ে। এর তাণ্ডবে ভেঙে পড়ে উপদ্রুত এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা, বন্ধ হয়ে যায় স্থানীয় বিমানবন্দর।
মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভে প্রথমে জানিয়েছিল, কম্পনের মাত্রা ৭ দশমিক ৭। তবে পরে জানানো হয়, রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার কম্পন ধরা পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি জাপানেও জারি করা হয় সুনামি সতর্কতা।
ভূমিকম্পপ্রবণ দেশগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থান। দেশটিতে মাঝেমধ্যেই ভূমিকম্প হয়। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট দেশটির লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ২০০৪ সালের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পের জেরে সুনামি আছড়ে পড়ে অন্তত ১৩টি দেশে। ওই সুনামিতে উপদ্রুত দেশগুলোতে দুই লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়াতেই মৃতের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২০ হাজার।