সর্বাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কিনতে রাশিয়া-ভারত চুক্তি চূড়ান্ত

রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে চুক্তি চূড়ান্ত করেছে মস্কো ও দিল্লি।মঙ্গলবার ক্রেমলিনের শীর্ষ কর্মকর্তা ইউরি উসাকভ চলতি সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের সময়ে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী ৪ অক্টোবর পুতিন ভারতের উদ্দেশে রওনা দেবেন জানিয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, সফরের অন্যতম ইস্যু হবে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা সরবরাহে চুক্তি স্বাক্ষর। এই চুক্তির মূল্য ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি বলেও জানান ইউরি উসাকভ।এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
ভারতের কাছে দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ বিক্রির জন্য বেশ কয়েক মাস ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মস্কো। এই চুক্তি নিয়ে বিরক্তি দেখিয়েছে ভারতের অন্যতম প্রতিরক্ষা সহযোগি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি চায় না ভারত রাশিয়ার প্রযুক্তি সংগ্রহ করুক।

ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়ার মস্কোর আগ্রাসনের জের ধরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে রাশিয়ার সঙ্গে গোয়েন্দা ও প্রতিরক্ষা সহায়তা সম্পর্ক গড়া দেশগুলোয় নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে।

গত আগস্টে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই ক্রয় চলতে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয় বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ওয়াশিংটনের কাছে নিষেধাজ্ঞা থেকে বিশেষ ছাড় চাওয়া হবে। তবে গত সপ্তাহে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, এটা যে করা হবে তার নিশ্চয়তা নেই।

রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০। দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে এটি ব্যবহার করা হয়। ব্যালেস্টিক ও ক্রুস ক্ষেপণাস্ত্রসহ তিন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্রকে লক্ষ্যভেদের আগেই নিষ্ক্রিয় করতে পারে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। বিদ্যমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে এটিকেই সর্বাধুনিক বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কেনার আগে রাশিয়া থেকে যুদ্ধবিমান, জাহাজ ও সাবমেরিন কিনেছে ভারত।

ভারতের পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা কিনছে চীন, তুরস্ক, সৌদি আরব ও কাতার। এদের মধ্যে কেউ কেউ চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলেছে আবার কেউ কেউ এই ক্ষেপনাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা করছে।

তুরস্কের এই ক্ষেপণাস্ত্র কেনার আগ্রহ নিয়ে এরইমধ্যেই উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরা পর্যন্ত। গত জুনে সৌদি আরবের তরফে বলা হয় কাতার যদি রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেয় তাহলে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ বিবেচনা করবে তারা। হুমকি সত্ত্বেও কাতারকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের কথা জানিয়েছে রাশিয়া। আর কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরহমান আল থানি বলেছেন, এই ব্যবস্থা কেনার সিদ্ধান্ত তাদরে সার্বভৌম সিদ্ধান্ত।