উপ-নির্বাচনে জিতলেন মালয়েশিয়ার আনোয়ার ইব্রাহিম

প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আয়োজিত উপনির্বাচনে জয় লাভ করেছেন মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম। এর মাধ্যম এই নেতা জেলখানা থেকে সরাসরি পার্লামেন্টের সদস্য হলেন।  শনিবার নির্বাচনের ফল ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশন বলেছে, নির্বাচনে পড়া মোট ভোটের ৭১ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি জয়ী হয়েছে। নির্বাচনে তার আরও ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

নির্বাচনে জয়লাভের পর মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম

গত মে মাসের নির্বাচনে মালয়েশিয়ার সাবেক ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে আনোয়ার ইব্রাহিমের দল জয়লাভ করে। নির্বাচনে জোট গঠনের প্রধান শর্ত ছিল, বিজয়ী হলে মাহাথির আনোয়ার ইব্রাহিমকে কারাগার থেকে মুক্ত করবেন, আর দুই বছর পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে নিজে অবসর নেবেন। ওই প্রতিশ্রুতির আইনগত বৈধতা দেওয়ার জন্য আনোয়ার ইব্রাহিমের পার্লামেন্টের সদস্যপদ দরকার। তাই তাকে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিতে নিজ দলের একজন এমপি পদত্যাগ করেন।

নির্বাচনে জয় লাভের পর আনোয়ার বলেছেন, ‘আমি এই ফলাফলে খুবই খুশি ও কৃতজ্ঞ।‘ তিনি বলেন, ‘এটা আমার মনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।  এটা সরকার ও তাদের সংস্কার প্রস্তাব এবং ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাসের ভোট।’ আনোয়ার মালয়েশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নেগরি সেমবিলান রাজ্যের পোর্ট ডিকসন আসন থেকে নির্বাচন করবেন। তিনি সোমবার পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে শপথ নিবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

 ’৯০-এর দশকে মাহাথির মোহাম্মদের শেষ আমলে সমকামিতা ও দুর্নীতির অভিযোগে আনোয়ারকে কারাগারে পাঠানো হয়। তারপর থেকেই তিনি মালয়েশিয়ায় সংস্কারপন্থী রাজনীতি শুরু করেন। আনোয়ার ওই সময় মাহাথিরের প্রধান সহকারী ছিলেন। তবে ১৯৯৭-১৯৯৯ সাল পর্যন্ত চলা অর্থনৈতিক সংকটের সময় দুই নেতার সম্পর্কে ফাটল ধরে। ২০০৪ সালে কারামুক্ত হলেও ২০১৫ সালে সমকামিতার অভিযোগে তাকে আবারও কারাগারে পাঠানো হয়। দুই সময়ই তিনি ও তার সমর্থকরা এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।

 মে মাসের নির্বাচনে জয়লাভের পর মাহাথির মোহাম্মদ আনোয়ারের রাজকীয় ক্ষমা মঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে তার হাতে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব হস্তান্তর করার প্রতিশ্রুতিও দেন। এর মাধ্যমে একসময় বন্ধু থেকে শত্রুতে পরিণত হওয়া দুই নেতা আবারও বন্ধুত্ব গড়েন।