বিশ্বের সঙ্গে 'সীমিত পরিসরে' যোগাযোগের সুযোগ ফিরে পেলেন অ্যাসাঞ্জ

বিশ্বের সঙ্গে আবারও সীমিত পরিসরে যোগাযোগের সুযোগ পেতে যাচ্ছেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। আবারও ইন্টারনেট দুনিয়ায় আংশিক প্রবেশাধিকার দেওয়া হচ্ছে তাকে। টেলিফোনে যোগাযোগের সুযোগও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে অ্যাসাঞ্জকে।  পাশাপাশি এখন থেকে কেউ চাইলে দূতাবাসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎও করতে পারবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রেস অ্যাসোসিয়েশনকে উদ্ধৃত করে  ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে কার্যত গৃহবন্দি রয়েছেন অ্যাসাঞ্জ।

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ২০১৭ সালের শেষদিকে অ্যাসাঞ্জের ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ কেটে দেয় ইকুয়েডর দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। ইকুয়েডরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া ফারনেন্দো এসপিওনা সে সময় বলেছিলেন, দূতাবাসে অবস্থানরত সময়ে অন্য কোনও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে ২০১৭ সালে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন অ্যাসাঞ্জ। বেশ কয়েকবার তিনি অন্যান্য দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন। এজন্য তাকে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। রবিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম প্রেস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ইকুয়েডর দূতাবাস কর্তৃপক্ষ অ্যাসাঞ্জকে আংশিকভাবে ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ ফিরিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি তার সঙ্গে এখন থেকে সাক্ষাৎকার করার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা।

উইকিলিকসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইকুয়েডরের পক্ষ থেকে অ্যাসাঞ্জকে জানানো হয়েছে যে, শুক্রবার জাতিসংঘের দুই সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনোয়ের বৈঠক শেষে তার ওপর আরোপিত বিচ্ছিন্নতা (ইন্টারনেট, ফোন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা) সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। উইকিলিকসের এডিটর-ইন-চিফ ক্রিস্টিন রাফসন এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটা ইতিবাচক যে, জাতিসংঘের হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ইকুয়েডর আংশিকভাবে অ্যাসাঞ্জের বিচ্ছিন্নতার ইতি টানছে, যদিও এটা খুবই উদ্বেগজনক যে, তার মত প্রকাশের স্বাধীনতা এখনও সীমাবদ্ধ।

ইতোমধ্যেই জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে যে, অ্যাসাঞ্জকে বিনা বিচারে, বিধিবহির্ভূতভাবে আটকে রাখা হয়েছে। এই অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতির অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে।

সুইডেনে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠার পর ২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসের আশ্রয়ে আছেন সাড়া জাগানো বিকল্পধারার সংবাদমাধ্যম  উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জ। তবে ধর্ষণের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন তিনি। তার আশঙ্কা, সুইডেনে গেলে সুইডিশ সরকার তাকে গ্রেফতার করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রত্যর্পণ করবে। আর যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বিচারের নামে মৃত্যুদণ্ড দেবে।

কাতালোনিয়ার স্বাধীনতাপন্থী নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমনকে জার্মানিতে গ্রেফতারের সমালোচনা করেছিলেন অ্যাসাঞ্জ। এরপর থেকেই তার ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় ইকুয়েডরের কর্তপক্ষ। যৌন হয়রানির মামলাটি সুইডেন প্রত্যাহার করে নিলেও লন্ডন আগের অবস্থানেই আছে। ফলে দূতাবাস থেকে বের হলেই গ্রেফতারের আশঙ্কা রয়েছে তার। গত ডিসেম্বরে অ্যাসাঞ্জকে নাগরিকত্ব দিয়েছিল ইকুয়েডর। তাকে কূটনৈতিক কর্মকর্তাও বানাতে চেয়েছিল তারা। তবে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতর বাধায় সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।