ব্রেক্সিট সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতাদের চাপের মুখে পড়বেন থেরেসা মে

ব্রেক্সিট চুক্তির জন্য নিজের দেশে সমর্থন আদায়ের জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’কে চাপ দেবেন ইউরোপীয় নেতারা। বুধবার (১৭ অক্টোবর) ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্মেলনে তারা মে’কে সতর্ক করে দিয়ে বলবেন, তিনি যদি দেশের মধ্যে সমর্থন আদায় না করতে পারেন, তাহলে কোনও চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে হবে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

download

বুধবার ব্রেক্সিট সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশের নেতাদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেবেন না থেরেসা মে। তার আগেই তিনি তাদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইউরোপীয় নেতারা মে’কে জানিয়ে দেবেন যে, রবিবার সংলাপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তারা আর চুক্তিতে খুব একটা ছাড় দেবেন না। কোনও চুক্তি ছাড়াই ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যকে বের করে দেওয়ার জন্য তারা পদক্ষেপ নেবেন।

সম্মেলনের সভাপতি ডোনাল্ড টাস্ক সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছেন, কোনও চুক্তি ছাড়াই যুক্তরাজ্যের জোট থেকে বের হয়ে গেলে আইনি ঝামেলায় পড়ার পাশাপাশি আগামী মার্চের ২৯ তারিখে সীমান্তে আগের চেয়ে অনেক বেশি গোলযোগ হতে পারে। তিনি ইইউ-ইউকে সীমান্ত ভাগাভাগির ক্ষেত্রে মে’কে ‘সৃষ্টিশীল’ সমাধান খুঁজে বের করার তাগাদা দিয়েছেন। টাস্ক এই সমস্যাকে ‘গর্ডিয়ান নট’ অভিহিত করে বলেছেন, তিনি মে’কে সমসাময়িক ‘আলেক্সাজান্ডার দ্য গ্রেট’ মনে করেন না। যিনি নিজের বেক্সিট চুক্তি নিয়ে লন্ডন ও বেলফাস্টে সম্মুখীন হওয়া বিরোধীদের দমন করে জয়ী হতে পারবে।

রয়টার্স বলছে, ‘নো ডিল’ বা চুক্তি না করার বার্তাটি যথেষ্ট আন্তরিক। ইইউ তাদের দৃষ্টিতে দুর্বল প্রতিপক্ষকে সমঝোতায় বাধ্য করতে চাপ দেওয়ার জন্য এটাকে কৌশল হিসেবে নিয়েছে। থেরেসা মের করা সেরা চুক্তির পক্ষে লড়াইয়ের জন্য রাজনৈতিক মঞ্চে তার জন্য এটা সহায়ক হবে।

খবরে বলা হয়, ইইউ নেতারা সংলাপের সময় নিয়েও অনেকটা স্বস্তিতে রয়েছে। মঙ্গলবার ইইউ কর্মকর্তারা আগের বুলিই আওড়ান যে, ‘সময় চয়ে যাচ্ছে’। যুক্তরাজ্যকে দ্রুত একটি চুক্তিতে রাজি হতে হবে যা ব্রেক্সিটের আগেই পার্লামেন্টে অনুমোদন করার পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়। তবে বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যেরই বেশি চিন্তা দেখে ইইউ কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ‘শান্ত থাকবেস ও কাজ করে যাবেন’। তারা চূড়ান্ত চুক্তির জন্য আগামী ডিসেম্বর এমনকি তারপরও অপেক্ষা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

থেরেসা মে নিজের মন্ত্রীসভা ও সমর্থকদের কাছ থেকে সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন জানিয়ে বেলজিয়ামের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিদিয়ের রেইনডার্স বলেন, ‘এই মুহূর্তে যুক্তরাজ্য নিজের সঙ্গেই লড়াই করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একটি চুক্তি করতে চাই তাহলে আরও অনেক সপ্তাহ কাজ করতে হবে। আমরা শান্তভাবে কাজ করবো।’ জার্মানির ইউরোপ মন্ত্রী থেরেসা মে’কে ‘দায়িত্ব নেওয়ার ও কার্যকর হওয়া’র আহ্বান জানিয়েছেন। তবে অনেক কূটনীতিক মনে করেন, আগামী নভেম্বরের শুরুতে পার্লামেন্টে বাজেট পাস করানোর আগে থেরেসা মে এই সমঝোতা নিয়ে কোনও অগ্রগতি করতে পাবে।

বুধবার থেরেসা মে চলে যাওয়ার পর নৈশভোজে ইইউ নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে একটি বিশেষ বেক্সিট সম্মেলন আয়োজন করা হবে কি না। তবে টাস্ক বলেছেন, দের বিশ্বাস করতে হবে যে, একটি চুক্তি প্রায় হয়ে গেছে। আর ব্রাসেলসে মে নতুন কোনও পদক্ষেপ না নিলে ধরে নিতে হবে যে, এই সপ্তাহেই চুক্তিটি হয়ে যাচ্ছে।