রাখাইনের গ্রামগুলোতে আশ্রয় মিলেছে ফিরে যাওয়া ১৭৭ রোহিঙ্গার: দাবি মিয়ানমারের

বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়া ১৭০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গাকে রাখাইনের গ্রামগুলোতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির প্রশাসন। মংডুর জেলা কর্তৃপক্ষ জানায়, যেসব গ্রামে তাদের আত্মীয় আছে সেখানেই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

rohingya-photo-900x420গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সম্পন্ন হয়। পরে গত ৬ জুন নেপিদোতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমার ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর মধ্যেও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেওয়ার সুনিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ বলছে, এখন পর্যন্ত কোনও রোহিঙ্গাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিরিয়ে নেয়নি মিয়ানমার।

তবে মংডু জেলার উপ-প্রশাসক ইউ এয়ে তু বলেন, মোট ১৭৭ জন রোহিঙ্গাকে পুনরায় আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০৬ জন পুরুষ ও  ৭১ জন নারী। তিনি দাবি করেন, ‘এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭৭ জন ফিরে এসেছে। গ্রামে তাদের নিকটাত্মীয়দের যাদের বাড়ি আছে সেখানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছে জেলা কর্তৃপক্ষ। 

সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানায়,  ১৭৭ জনের মধ্যে ৬২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো। পরে ২৭ মে সরকার তাদের মুক্তি দেয়। আটককৃত রোহিঙ্গারা জানতেন না যে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যাবাসন চুক্তি হয়েছে। আর ৯২ জনকে একটি ডুবন্ত নৌকা থেকে উদ্ধার করেছে মিয়ানমার। বাকি ২৩ জনকে বিভিন্ন সময় সীমান্তে আটক করা হয়েছে।

মংডুর পান্তাপিন গ্রামের প্রশাসক ইউ আনারওয়া বলেন, ‘চলতি মাসে যারা ফিরে এসেছে তারা কিয়েন কিয়াং গ্রামের। আমি শুনেছি তারা মংনি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো তাদের খাবার সরবরাহ করছে।

ইরাবতি জানায়, প্রত্যাবাসন চুক্তির বেশ কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি। ইউ ইয়ে তু বলেন, ‘বলা হচ্ছে যে ৪ থেকে ৬ হজার রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন হবে। তবে আমরা এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও চিঠি পাইনি।

রোহিঙ্গাদের গ্রহণে মিয়ানমার সরকার সীমান্তে দুটি ক্যাম্প স্থাপন করেছে। আরেকটি অস্থায়ী আশ্রয়শিবিরও খুলেছে তারা।