সত্য জানতে চায় ইউরোপ, সৌদি ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান

অনুসন্ধানী সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের সৌদি ব্যাখ্যা প্রত্যাখ্যান করেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। গত ২ অক্টোবর খাশোগি নিখোঁজের পর থেকেই সৌদি আরব দাবি করে আসছিলো, তিনি ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেট থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন। শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রথমবারের মতো দেশটি দাবি করে, হাতাহাতির এক পর্যায়ে খাশোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে। সরবরাহকৃত ব্যাখ্যাকে ‘অপর্যাপ্ত’ ও ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে সত্য উন্মোচনে হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ-সুষ্ঠু ও যথাযথ তদন্ত নিশ্চিতে রিয়াদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো।

nonameখাশোগি হত্যাকাণ্ড প্রশ্নে সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর শনিবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা খাশোগিকে সৌদি আরবে ফিরিয়ে আনার জন্য সাধারণ নির্দেশনা জারি ছিল। যখন খবর আসে ২ অক্টোবর খাশোগি ইস্তানবুল কনস্যুলেটে যাবেন বিয়ের জন্য কিছু নথিপত্র নিতে তখন জেনারেল আসিরি ১৫ সদস্যের একটি দল পাঠান এ ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করতে। সৌদি কনস্যুলেটে দেখা করতে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে খাশোগির লড়াই হয়। আর তাতেই খাশোগির মৃত্যু হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘারিনি একে আন্তর্জাতিক রীতিনীতির ভয়াবহ লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছেন। ঘটনার যথাযথ পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, তা খুবই ভয়াবহ। এটি ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা চুক্তির লঙ্ঘন। ঘটনায় দোষীদের বিচার নিশ্চিতেরও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল আর পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেইকো মাস তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, ‘খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরবরাহকৃত সৌদি ব্যাখ্যা পর্যাপ্ত নয়। এখনও কিছুই পরিষ্কার হয়নি, কী ঘটেছে তা অনুসন্ধানের জোর দাবি জানাচ্ছি’।  বিবৃতিতে দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় নেওয়ারও জোর দাবি জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রী হেইকো মাস জার্মানির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এআরডি-কে বলেছেন, ‘যতোক্ষণ পর্যন্ত বিয়ষটি তদন্তাধীন, যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা সবকিছু স্পষ্ট করে জানতে পারছি না, ততোক্ষণ পর্যন্ত সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির ব্যাপারে ইতিবাচক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নাই।’

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন ইভস লে ড্রিয়ান বলেছেন, ‘অনেক প্রশ্নের উত্তরই এখনও অজানা এবং সেসব জানতে প্রয়োজন একটি পুঙ্খানুপুঙ্খু ও কার্যকর তদন্ত’। কানডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, ‘যে বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে তার ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ’। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, ‘জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। এ ঘটনার যথাযথ তদন্তে তুরস্ককে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দিতে আমরা সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।’