জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরে উপ-নির্বাচনে হারল অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীনরা

ইসরায়েলের দখলকৃত জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপ-নির্বাচনে হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দল। পূর্ব সিডনির এই সংসদীয় আসনে হারার পর পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সংকটে পড়তে পারে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের নেতৃত্বাধীন রক্ষণশীল জোট। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

স্কট মরিসন

গত সপ্তাহ স্কট মরিসন অকস্মাৎ ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে তাদের ইসরায়েলি দূতাবাস স্থানান্তর করা হবে। এতে খুশি হয়েছিল ইসরায়েল, ফিলিস্তিনিরা হয়েছিল ক্ষুব্ধ। জনমত জরিপে দেখা যায়, ওয়েন্টওর্থ অঞ্চলে ইহুদি ভোটারদের সমর্থন পাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় ভোটারদের ১৩ শতাংশ ইহুদি ধর্মাবলম্বী। মুসলিমদের সঙ্গে ধীরে ধীরে দূরত্ব তৈরিকারী সরকারকে আগামী মাসে আরেকটি নির্বাচনে অবশ্যই জিততে হবে।

৪২ বছরের বাংলাদেশি মুসলিম অভিবাসী আলি শিকদার বলেন, এটা উপযুক্ত পদ্ধতি না। জেরুজালেম নিয়ে সিদ্ধান্তে প্রমাণ হয়েছে সরকার মুসলিমদের কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। আমাদের কিছু বলার নাই। কিন্তু হ্যাঁ বা না বলার (ভোট) ক্ষমতা রয়েছে। আমি মনেকরি এই সিদ্ধান্ত ভোটে প্রভাব ফেলবে।

এই আসনে ক্ষমতাসীনদের হারিয়ে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কেরিন ফেল্পস। ফলে সংসদে কোনও আইন পাস করতে হলে মরিসনকে কেরিনসহ আরও চার স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে।

দলের ভেতরে ক্যু-র মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া মরিসনের পূর্বসুরী ম্যালকম টার্নবুল জেরুজালেমে দূতাবাস হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ফয়সাল মোহাম্মদ বলেন, সবাই এটার বিরোধিতা করেছে। তবে নাহিদা সাফার নামের এক নারী বলেন, আমরা বহু সংস্কৃতির দেশ। জেরুজালেমে কী হচ্ছে তা নিয়ে আমাদের ভাবা ঠিক না। আমি এটাই মনে করি।

উল্লেখ্য, ইহুদি-খ্রিস্টান ও মুসলিম; তিন সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য পবিত্র ধর্মীয় স্থান জেরুজালেম। ইসরায়েলের দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী মনে করে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি দ্বন্দ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত বিষয় হচ্ছে জেরুজালেমের অবস্থান।  গত বছরের ৬ ডিসেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের একক রাজধানীর স্বীকৃতি দেন। বিশ্বজুড়ে নিন্দা আর তুমুল প্রতিবাদের মধ্যেও দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের ব্যাপক বিক্ষোভের মধ্যেই এ বছরের মে মাসে  জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে নিহত হন শতাধিক।