আসামে পাঁচ বাঙালি দিনমজুরকে হত্যার দায় অস্বীকার উলফার (আই)

আসামের তিনসুকিয়া জেলায় পাঁচ বাঙালি দিনমজুরকে গুলি চালিয়ে হত্যার দায় অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে বিদ্রোহী সংগঠন উলফা (আই)। বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনটি দাবি করেছে, এ হত্যাকাণ্ডে তাদের কোনও সম্পৃক্ততা নেই।

উলফার বিবৃতি
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ বিসনিমুখ গ্রামে প্রবেশ করে অজ্ঞাত পরিচয় বন্দুকধারীরা। এরপর পাঁচ বাংলাভাষী দিনমজুরকে ঘর থেকে ডেকে বের করা হয় এবং তাদের ব্রহ্মপুত্রের তীরে নিয়ে গিয়ে গুলি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, হত্যাকারীরা সবাই সেনাবাহিনীর মতো পোশাক পরে ছিল। নিহতদের মধ্যে শ্যামল বিশ্বাস (৬০), অনন্ত বিশ্বাস (১৮) ও অবিনাশ বিশ্বাস একই পরিবারের সদস্য। এছাড়া, আরও দুই নিহত হলেন সুবল দাস (৬০) ও ধনঞ্জয় নমশূদ্র (২৩)। এরা সকলেই দিনমজুরের কাজ করতেন। বিসনিমুখ গ্রামটি বাঙালি অধ্যুষিত। বিসনিমুখ গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষিকাজ বা দিনমজুরির সঙ্গে যুক্ত।

এ হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিকভাবে বিদ্রোহী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (ইন্ডিপেনডেন্ট) তথা উলফাকে (আই) সন্দেহ করছে পুলিশ। আসাম পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের ডিজি পল্লব ভট্টাচার্য দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘এই ঘটনার পেছনে উলফা (আই) বা কোনও যৌথ জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত রয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করছি। সাত দিন আগে বাঙালি প্রধান এলাকায় হামলা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল। কিন্তু, সে সময় নির্দিষ্টভাবে কিছুই বলা হয়নি।’ তবে পুলিশের সে সন্দেহকে নাকচ করে দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে উলফা-আই। সংগঠনটির দাবি, এ হত্যায় তাদের কোনও ভূমিকা নেই।

উলফার (ইন্ডিপেনডেন্ট) বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো যাচ্ছে যে, ১ নভেম্বর তিনসুকিয়ায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে সংযুক্ত মুক্তিবাহিনী অসম (স্বাধীন)-এর কোনও সংযোগ নেই।’

উল্লেখ্য, সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী উলফার জন্ম ১৯৭৯ সালে। আসামের সার্বভৌমত্বের দাবিতে প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে লড়াই করছে এই সংগঠনটি। তবে কয়েক বছর আগে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজ খোয়াসহ শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ আত্মসমর্পণ করে ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালাচ্ছেন। কিন্তু সংগঠনটির সামরিক প্রধান পরেশ বড়ুয়া তার অনুগামীদের নিয়ে উলফা (ইন্ডিপেনডেন্ট) নামে পৃথক সংগঠন গড়ে তুলেছেন এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ মঞ্চও গড়েছেন। গত অক্টোবরে আসামের শুক্লেশ্বর ঘাট এলাকায় মৃদু বিস্ফোরণ ঘটে এবং এর দায় স্বীকার করেছিলেন পরেশ বড়ুয়া।