শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায়

শ্রীলঙ্কার সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারকের একটি বেঞ্চ এ নির্দেশ জারি করেছেন।

শ্রীলঙ্কা প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা

 

২৬ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার আকস্মিকভাবে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে দায়িত্ব দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে। ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা বিক্রমাসিংহে দায়িত্ব ছাড়তে অস্বীকৃতি জানালে দেশটিতে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়। পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে জেতার মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হন রাজাপাকসে। এক বিবৃতিতে রাজাপাকসের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানান স্পিকার। স্পিকার বলেন, পার্লামেন্টের বেশিরভাগ সদস্যের মত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী পরিবর্তন অসাংবিধানিক ও প্রথাবিরোধী। শুক্রবার (৯ নভেম্বর) স্থগিত থাকা পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। সেই সঙ্গে ৫ জানুয়ারি আগাম নির্বাচনের ডাক দেন তিনি।

শনিবার (১০ নভেম্বর) সাবেক বিক্রমাসিংহে সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাউইরা বলেন, ‘আমরা আদালতে লড়বো, পার্লামেন্টে লড়বো এবং ভোটে লড়বো।’

দেশটির সংবিধানের ১৯তম সংশোধনী অনুযায়ী, সংসদে ভোটাভুটি ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত করতে পারেন না। আর পার্লামেন্টে ভোট হলে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো যাবে না। কারণ, সিরিসেনার দল ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স (ইউপিএফএ) ও রাজাপাকসের দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির মিলিত আসনের সংখ্যা ৯৫ এবং বিক্রমাসিংহের দল ইউএনপির আসন সংখ্যা ১০৬।

২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ছিলেন রাজাপাকসে। ২০১৫ সালে একই দলের প্রার্থী রাজাপাকসেকে হারিয়ে সিরিসেনা প্রেসিডেন্ট হন। পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর গঠিত হয় জোট সরকার, সিরিসেনা যার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন বিক্রমাসিংহেকে। কিন্তু তারপর থেকে তাদের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠতে থাকে, যার প্রেক্ষিতে সিরিসেনা তাকে বরখাস্ত করে রাজাপাকসেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে এমন নানামুখী তৎপরতার পরও শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের নিয়োগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রী সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়।