চীনের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে চাইছে মালদ্বীপের নতুন সরকার

চীনের সঙ্গে করা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ভাবছে মালদ্বীপের নতুন সরকার। ক্ষমতাসীন জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে নাশিদের মন্তব্য নিয়ে চীনের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

চীন ও মালদ্বীপের পতাকা

গত সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে সাবেক চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিনকে পরাজিত করেন ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ। আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি দেশকে চীনের কাছে বিকিয়ে দিচ্ছেন। গত বছরের ডিসেম্বরে মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ ইয়ামিন চীনের সঙ্গে একটি মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। আর এ চুক্তিকে ‘একপেশে’ বলে উল্লেখ করেছেন বর্তমান ক্ষমতাসীন জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাশিদ বলেন, ‘মুক্তবাণিজ্য চুক্তিটি খুব একপেশে.....সংখ্যাগুলো মিলে না।’

বাণিজ্য চুক্তিটি কার্যকর করতে হলে পার্লামেন্টে আইন পাস করতে হবে। তবে নাশিদ জানিয়ে দিয়েছেন, পার্লামেন্ট আইনটি অনুমোদন করবে না।

মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট সোলিহ
মালদ্বীপের আগের মেয়াদের প্রেসিডেন্ট চীনপন্থী হওয়ায় তার শাসন মেয়াদে দেশটিতে বেইজিংয়ের প্রভাব ছিল। তবে নতুন প্রেসিডেন্ট সোলিহ ভারতপন্থী হওয়ায় তার শপথগ্রহণের দিন থেকেই দিল্লিকে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালাতে দেখা গেছে। মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শপথ অনুষ্ঠানের পর দু’দেশের শীর্ষ বৈঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে মালদ্বীপের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। সন্ত্রাসবাদ দমনে যৌথ সহযোগিতার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। 

‘ভারতই প্রথম’ নীতিতে দেশকে ফেরানোর ইঙ্গিত জয়ের পর পরই দিয়েছিলেন মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট সোলিহ। যেসব ভারতীয় প্রকল্পের কাজ আটকে দেওয়া হয়েছিল, সেগুলো ফের চালু করার আশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সংস্থাগুলোকে ফের মালদ্বীপে কাজ শুরু করতে দেওয়া এবং ভারত-মালদ্বীপ সামরিক সম্পর্ক ফের মজবুত করার ইঙ্গিত দেন তিনি। শনিবারের (১৭ নভেম্বর) শপথ অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ স্তরের বিদেশি নেতা হিসেবে মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সোলিহ স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন, মালদ্বীপকে ফের ভারতমুখী করতে চলেছেন তিনি। শপথগ্রহণের পর সোলিহকে জড়িয়ে ধরেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী। কোনও বিদেশি নেতার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে এটিই প্রথম উপস্থিতি ছিল মোদির।