পাকিস্তানের নারীবাদী লেখিকা ফাহমিদা রিয়াজের মৃত্যু

পাকিস্তানের স্বনামধন্য নারীবাদী লেখিকা, কবি ও মানবাধিকারকর্মী ফাহমিদা রিয়াজ মারা গেছেন। বুধবার সন্ধ্যায় (২১ নভেম্বর) লাহোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। পাকিস্তানে অনেকের কাছে তিনি ‘নারীবাদী সাহিত্যের অগ্রদূত’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

ফাহমিদা রিয়াজ
ডন জানিয়েছে, কয়েক মাস ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এ লেখিকা। বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) বাদ আসর লাহোরে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

১৫টিরও বেশি কথা সাহিত্য ও কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা ফাহমিদা রিয়াজ। ১৯৪৬ সালের জুলাইয়ে ভারতের মিরাটে একটি সাহিত্য অনুরাগী পরিবারে জন্ম তার। ফাহমিদার প্রথম সাহিত্যকর্ম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৬৭ সালে। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, ‘ধুপ’, ‘পুরা চান্দ’, ‘আদমি কি জিন্দেগি’। তার রচিত উল্লেখযোগ্য সাহিত্যগুলো হলো, ‘জিন্দা বাহার’, ‘গোদাভারি’ ও ‘করাচি’।

সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবসময় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন ফাহমিদা। ১৯৭৩ সালে দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘বাদান দারিদা’ প্রকাশিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে কাব্যে অশ্লীলতা ও শরীরী ভাষা প্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। নারী লেখকের রচনায় এ সব বিষয়ের উপস্থিতিকে আগে পাকিস্তানে ট্যাবু হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

ফাহমিদা রিয়াজ তার রাজনীতিক মতাদর্শের জন্যেও শাসকগোষ্ঠীর হয়রানির শিকার হয়েছেন। স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়াউল হকের সময়ে ছয় বছর ভারতে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন তিনি। ১৯৮৮-১৯৯০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান পিপলস পার্টির সরকারের অধীনে ন্যাশনাল বুক কাউন্সিল অব পাকিস্তানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন ফাহমিদা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনজির ভুট্টোর দ্বিতীয় মেয়াদে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছেন তিনি।