রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে চাপ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর

মিয়ানমারে সংঘটিত রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে চাপ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। নিধনযজ্ঞের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে জরুরিভিত্তিতে একটি অপরাধ আদালত স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে একটি মানবাধিকার সংস্থা। দ্য পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল অ্যান্ড পলিসি গ্রুপ (পিআইএলপিজি) নামের এ সংস্থাটি রোহিঙ্গা নিপীড়নের ঘটনা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। সোমবার সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্মি সেনাবাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ সংঘটনের প্রামাণ্য দলিল রয়েছে।

প্রতিবেদন তৈরিতে বর্মি সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হাজারখানেক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলেছে মানবাধিকার সংস্থা পিআইএলপিজি।

পিআইএলপিজি বলছে, কোনও জনগোষ্ঠী নিজ দেশের সরকারের নৃশংস অপরাধের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য তাদের সুরক্ষা নিশ্চিতের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বার্মার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত নভেম্বরে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চির সঙ্গে এক বৈঠকে এ ইস্যুতে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। সু চি’কে তিনি বলেন, ‘যে সহিংসতার কারণে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে, তার পক্ষে কোনও অজুহাত থাকতে পারে না।’ জবাবে সু চি বলেন, এই বিষয়ে একেকজনের দৃষ্টিভঙ্গি একে করকম। সবার মতামতে ভিন্নতা রয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহের জন্য শিগগিরই একটি কমিটি গঠনের কথা বিবেচনা করছে জাতিসংঘ। এ কমিটি গঠন করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য জাতিসংঘের পঞ্চম কমিটিতে আলোচনা চলছে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘কমিটি গঠনের জন্য ৬৫ জন লোকবলসহ এ বছরের বাজেটে ৫৫ মিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে। সদস্য দেশগুলো এটি নিয়ে আলোচনার পরে কিছুটা কাটছাঁট সাপেক্ষে তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এটি পাস হতে পারে।’

গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল ২০১১ থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমারে যত মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার প্রমাণ সংগ্রহের জন্য একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ মেকানিজম প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত হয়। এটি সিরিয়াতে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ সংগ্রহের জন্য যে মেকানিজম আছে সেই আদলে তৈরি করা হবে। এই কমিটি কাজ শুরু করার পর প্রতি বছর মানবাধিকার কাউন্সিল এবং জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে তাদের বাৎসরিক রিপোর্ট পেশ করবে।