কর কমানো এবং বেতন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ফরাসি প্রেসিডেন্টের

আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। নিম্ন আয়ের মানুষদের বেতন বাড়ানোর পাশাপাশি করের বোঝা কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে জরুরি সংস্কার আনতে ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেবে সরকার। সোমবার রাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।

দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ‘প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা’ নেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যত শিগগির সম্ভব জনগণের ওপর করের বোঝা কমানো হবে। সরকারি ব্যয় কমিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতের জরুরি সংস্কার সম্পন্ন করা হবে।

ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ প্রতিশ্রুতি দেন, সীমিত আয়ের শ্রমিকদের ওপর থেকে করের বোঝা কমানো হবে। পেনশনভোগীদের ওপর আরোপিত কর বাড়ানোর পরিকল্পনা স্থগিত করা হবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, মাসিক বেতন কমপক্ষে ১০০ ইউরো বাড়ানো হবে। ওভারটাইমের ওপর কোনও কর বসানো হবে না।

অর্থনৈতিক সংকট এবং জ্বালানির ওপর কর বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ১৭ নভেম্বর থেকে ফ্রান্সে আন্দোলন শুরু হয়। ধীরে ধীরে সে আন্দোলন সরকারবিরোধী তথা পুঁজিবাদবিরোধী ‘হলুদ জ্যাকেট’ আন্দোলনে রূপ নেয়। গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ফ্রান্সের নিরাপত্তা বাহিনীর নজিরবিহীন সংঘর্ষ হয় যার ফলে অন্তত চারজন নিহত এবং শত শত মানুষ আহত হয়। গ্রেফতার করা হয় সহস্রাধিক বিক্ষোভকারীকে। দেশজুড়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে এমন অস্থিরতার মধ্যেই সোমবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

জ্বালানির কর বৃদ্ধি ও জীবন যাপনের ক্ষেত্রে উচ্চ মূল্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ ফ্রান্সের ইতিহাসে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। ১ ডিসেম্বর প্যারিসের রাস্তায় কয়েক দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা হতে দেখা গেছে। সহিংসতায় প্রাণহানিও হয়। তুমুল বিক্ষোভের মুখে ফ্রান্স সরকার জ্বালানি কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করলেও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়ে যায়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ববিহীন ইয়েলো ভেস্ট বিক্ষোভকারীরা সরকারের কাছে ন্যুনতম পেনশন, কর ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন, অবসরের বয়সসীমা কমানোসহ ৪০টিরও বেশি দাবি তুলে ধরে।

৮ ডিসেম্বর প্রায় ১ লাখ ৩৬ হাজার ইয়েলো ভেস্টস আন্দোলনকারী রাস্তায় নেমে আসে। এদিন ১২শ’রও বেশি বিক্ষোভকারীকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেওয়া হয়। বিক্ষোভপূর্ণ এ পরিস্থিতিকে ‘ব্যবসায়ের জন্য বিপর্যয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন ফরাসি অর্থমন্ত্রী। সূত্র: টাইম, পার্স টুডে।