২০১৯ সালে ফিরতে পারে আড়াই লাখ সিরীয় শরণার্থী: জাতিসংঘ

ব্যাপক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হলেও ২০১৯ সালে আড়াই লাখ সিরীয় শরণার্থী নিজেদের দেশে ফিরততে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। মঙ্গলবার জেনেভায় ইউএনএইচসিআর’র মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা বিষয়ক পরিচালক আমিন আওয়াদ সাংবাদিকদের জানান, প্রায় ৫৬ লাখ সিরীয় শরণার্থী প্রতিবেশি তুরস্ক, লেবানন, জর্ডান, মিসর এবং ইরাকে রয়ে গেছে। সামগ্রিকভাবে যুদ্ধ শেষ হয়েছে জানিয়েছে, জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন শরণার্থীদের নিজে দেশে ফেরার বাধা দূর করতে তারা কাজ করে যাচ্ছেন। এর ওপর নির্ভর করে দেশে ফেরা শরণার্থীদের সংখ্যা বাড়তে বা কমেত পারে বলেও জানান তিনি।noname
২০১১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে সিরিয়ার অর্ধেক অধিবাসী পালিয়ে যায়। শরণার্থী হিসেবে তাদের মধ্যে প্রায় ৬৩ লাখ বিদেশে পালিয়ে যায়। নিজ দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয় আরও প্রায় ৬০ লাখ। অনেকেই একাধিকবার পালাতে বাধ্য হন। পালিয়ে যাওয়াদের  মধ্যে প্রায় দশ লাখ লেবাননে, তুরস্কে প্রায় ৩৬ লাখ, জর্ডানে প্রায় সাত লাখ শরণার্থী চলে যায় বলে জানায় ইউএনএইচসিআর। এছাড়া যুদ্ধ শুরুর পর পালিয়ে যাওয়ার বিভিন্ন শিবিরে প্রায় দশ লাখ সিরীয় শিশুর জন্ম হয়েছে। এসব শিশুদের বিদেশি বার্থ সার্টিফিকেট স্বীকৃতি দিতে সিরিয়ার সরকার সম্মত হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন, ইউএনএইচসিআর’র কর্মকর্তা।

জাতিসংঘ কর্মকর্তা আওয়াদ বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি ২০১৯ সালে প্রায় আড়াই লাখ সিরীয় ফিরে যাবে। আমরা যে শান্তি এবং প্রত্যাবাসনের বাধা দূর করতে কাজ করছি তার ওপরে নির্ভর করে এই সংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে’। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, সামগ্রিক বিবেচনায় যুদ্ধ শেষ হয়েছে। কয়েকটি ছোট ছোট পকেটে যুদ্ধ চলছে। এর মধ্যে ইদিলিব এবং অপর তিনটি এলাকায় যুদ্ধবিরতি ও উত্তেজনা বর্জনের বিষয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

ইউএনএইচসিআর’র তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর প্রায় ৩৭ হাজার শরণার্থী সিরিয়ায় ফিরেছে। এসব শরণার্থী মূলত দেরা, দামেস্ক, এবং হোমস শহরে গেছেন বলে জানান আওয়াদ। আওয়াদ বলেন, ফিরে আসার ক্ষেত্রে মূল বাধা হিসেবে রয়ে গেছে শরণার্থী এবং তাদের সম্পত্তি ও বাড়িঘর নথিভুক্ত করা। এছাড়া বাধ্যতামূলক সেনাদলে নিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যু এবং সেনাবাহিনীকে আঘাতকারীদের সাধারণ ক্ষমা বিষয়ক ইস্যুও রয়েছে। অন্যসব বাধার মধ্যে রয়েছে মাইন আর অবিস্ফোরিত অস্ত্র। আওয়াদ বলেন, কৃষিক্ষেত এবং বেসামরিক এলাকা নিরাপদ করতে বিশাল মাইন অপারেশন অভিযান চালানোর প্রয়োজন হবে।

সিরীয় শরণার্থীদের স্বাস্থ্য, পানি, পয়নিস্কাশন, খাবার, শিক্ষা এবং মনো-সামাজিক সমর্থন দিতে প্রতিবেশিদের ৫৫০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা দিতে দাতাদের প্রতি মঙ্গলবার আহ্বান জানায় ইউএনএইচসিআর। এই আহ্বান জানিয়েছে আওয়াদ বলেন,  নির্বাসনে টিকে থাকা দীর্ঘায়িত হতে থাকায় তাদের বসবাসের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। তারা টাকা ধার করছে আর ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন আশ্রয় দেওয়া দেশগুলোর দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শরণার্থী।