১৬,০০০ বন্দি বিনিময়ে সম্মত ইয়েমেন সরকার ও হুথি বিদ্রোহীরা

১৬ হাজার বন্দি বিনিময়ে ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকার এবং তাদের প্রতিপক্ষ হুথি বিদ্রোহীরা। সুইডেনে জাতিসংঘের উদ্যোগে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনায় এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। আলোচনায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধি দলের একজন সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি।

nonameইয়েমেন সরকারের বন্দি বিনিময় বিষয়ক কমিটির প্রধান হাদি হাইগ জানান, উভয় পক্ষের বন্দিদের নামগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। নিখোঁজ ব্যক্তিরাও এর আওতায় পড়বেন।

যথাসময়েই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন হাদি হাইগ।

ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীদের বন্দি শিবিরের দায়িত্বে রয়েছেন আবদুল কাদের আল-মুরতাদা। জাতিসংঘ এবং ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হাদি হাইগ এবং আবদুল কাদের আল-মুরতাদা’র মধ্যে এ সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বন্দি বিনিময়ের জন্য সরকার পক্ষ থেকে তাদের হেফাজতে থাকা আট হাজার ৫৭৬ বন্দির একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে হুথি বিদ্রোহীদের পক্ষ থেকে দেওয়া তালিকায় নাম রয়েছে সাত হাজার ৪৮৬ জনের।

২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুথিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনীর একাংশ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ২০১৫ সালের মার্চে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অনেক নারী-শিশুও রয়েছে।

২০১৮ সালের অক্টোবরে আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম জানায়, যুদ্ধের কারণে ইয়েমেনে গড়ে প্রতি তিন ঘণ্টায় একজন মানুষের মৃত্যু হয়। এই ভয়াবহ পরিসংখ্যান তুলে ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে ইয়েমেনে আগ্রাসন চালানো সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

অক্সফাম জানায়, সিভিলিয়ান ইমপ্যাক্ট মনিটরিং প্রজেক্ট  এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১ আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ১৩৬ শিশুসহ অন্তত ৫৭৫ বেসামরিক প্রাণ হারিয়েছেন।

চলতি ডিসেম্বরের গোড়ার দিকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে মানবিক সহায়তার জন্য ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। সংস্থা্টির মানবাধিকার ও জরুরি ত্রাণ বিষয়ক সমন্বয় মার্ক লোকক বলেন, ইয়েমেন ভয়াবহ দুর্যোগের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। জরুরিভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন।

মার্ক লোকক বলেন, ইয়েমেনের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘আমি ইয়েমেন সফরের সময় সানার বাইরে বাস করা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের।