ইরান সীমান্তে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা, নিহত ৬

দক্ষিণ পশ্চিম পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে ইরান সীমান্তবর্তী পার্বত্য এলাকায় ভারী গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে দেশটির ছয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছে।  প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী জহুর আহমেদ বুলেদি শুক্রবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, কেচ জেলার একটি পার্বত্য সড়কে ওই এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা ভারী গুলিবর্ষণের মুখে পড়লে ছয় জন নিহত ও অপর ১৪ জন আহত হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে মেইল পাঠিয়ে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ও বেলুচ রাজি আজোয় সাঙ্গার (বিআরএএস)।ইরান সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারী গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে নিহত হয় পাকিস্তানের ছয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা
পাকিস্তানের অশান্ত প্রদেশ বেলুচিস্তানে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়। স্বাধীনতাপন্থী গ্রুপগুলো ছাড়াও বেলুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় বেশ কয়েকবারই হামলা চালিয়েছে উগ্র ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তেহরিক-ই- তালেবান (এরা পাকিস্তান তালেবান নামেও পরিচিত)। অভিযোগ আছে সেখানকার স্বাধীনতাপন্থী গোষ্ঠীগুলো ইরান সীমান্ত এলাকার উভয় পাশেই নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা করে। ২০১৬ সালের পর থেকে ওই এলাকায় বড় ধরণের হামলার ঘটনা না ঘটলেও চলতি বছরের অক্টোবরে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে এসব গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। 

গত মাসে স্বাধীনতাপন্থী বেলুচ লিবারেশন আর্মি’র তিন সদস্য পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় করাচি শহরে অবস্থিত চীনা দূতাবাসে ঢোকার চেষ্টা করে দুই পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে।  তবে বিস্ফোরক বোঝাই ট্রাক নিয়ে দূতাবাসের অভ্যন্তরে প্রবেশের আগেই পুলিশের গুলিতে নিহত হয় তারা।

খনিজ আর প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর হয়েও পাকিস্তানের দরিদ্রতম প্রদেশগুলোর অন্যতম বেলুচিস্তান। দীর্ঘদিন থেকেই সেখানকার স্বাধীনতাপন্থী গোষ্ঠীগুলো দাবি করে আসছে পাকিস্তান রাষ্ট্র তাদের ভূমি দখল করেছে। সম্প্রতি ওই অঞ্চলে শুরু হওয়া চীনের বিনিয়োগকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে তারা। স্বাধীনতাপন্থী গোষ্ঠীগুলোর অনেকেই পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ ও সীমান্তবর্তী ইরানের সিস্তান প্রদেশের অংশবিশেষ নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

গত জুলাইতে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণার সময়ে বেলুচিস্তানের এক জনসভায় আত্মঘাতী হামলায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সিরাজ রাইসানিসহ ১২৮ জন নিহত হয়।  মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করে।