অবশেষে কেরালার মন্দিরে চার রূপান্তরকামী

শেষ পর্যন্ত চার রূপান্তরকামী নারী ভারতের কেরালা রাজ্যের সবরিমালা মন্দিরে প্রবেশ করতে সমর্থ হয়েছে। রবিবার কর্তৃপক্ষীয় বাধার মুখে পড়লেও মঙ্গলবার উচ্চ আদালতের রায় ও কর্তৃপক্ষীয় অনুমোদন সাপেক্ষে মন্দিরে প্রবেশ করতে সমর্থ হয় তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, এদিন পুলিশ পাহারায় কালো শাড়ি পরিহিত ওই চারজন মন্দিরে প্রার্থনায় অংশ নেন।noname

ভারতের কেরালা রাজ্যের পাহাড় চুড়ায় অবস্থিত সবরিমালা মন্দিরে ঐতিহ্যগতভাবে নিষিদ্ধ ছিল রজঃস্বলা নারীদের প্রবেশাধিকার। ১০-৫০ বছর বয়সী নারীরা ঢুকতে পারত না ওই মন্দিরে।  তবে রজঃস্বলা না হওয়ায় রূপান্তরকামী নারীরা ঠিকই প্রবেশ করতে পারত সেখানে। গত ২৮ সেপ্টেম্বর দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নারীদের প্রবেশাধিকারের বয়সসীমা ‍তুলে নেয়। এতে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। রায় সত্ত্বেও মন্দির কর্তৃপক্ষের নেতিবাচক মনোভাব ও স্থানীয় উত্তেজিত জনতার চাপে এখনও সেখানে রজঃস্বলা নারীরা প্রবেশে সমর্থ হয়নি। কেবল তাই নয়, নারীদের পাশাপাশি রূপান্তরকামীরাও সেখানে ঢুকতে বাধার মুখে পড়ে।

গত রবিবার চার রূপান্তরকামী নারী মন্দিরটিতে প্রবেশ করতে গিয়ে পুলিশি বাধায় পড়েন। নিরাপত্তা শঙ্কাকে কারণ দেখিয়ে তাদের মন্দিরে ঢুকতে পুরুষের পোশাক পরার পরামর্শ দেয় পুলিশ। পরামর্শ প্রত্যাখান করে কেরালা হাইকোর্টে যান চার রূপান্তরকামী নারী। উচ্চ আদালত তাদের মামলার বিষয়টি নিস্পত্তি করতে একটি প্যানেল গঠন করে দেয়। ওই প্যানেল সিদ্ধান্ত দেয়, রুপান্তরকামীরা মন্দিরের প্রার্থনায় অংশ নিতে পারবে। মন্দির কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে সম্মত হয়। তারা জানায়, রুপান্তরকামী নারীরা রজঃসলা না হওয়ায় তারা মন্দিরে প্রবেশ করলে তাদের আপত্তি নেই।

সবরিমালা মন্দিরে ভগবান আয়াপ্পার প্রার্থনা করা হয়। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অবিবাহিত এই ভগবানের মন্দিরে রজঃসলা নারীদের প্রবেশকে অপবিত্র বলে বিবেচনা করে থাকে।

মঙ্গলবার মন্দির থেকে বের হয়ে ৩৩ বছর বয়সী তৃপ্তি বলেন, তার মতো নারীরা হিন্দু ধর্মেরই অংশ আর তাদের সেই সম্মান দেখানো হয়। তিনি বলেন, ভগবান আয়াপ্পার প্রার্থনা করতে পারায় আমি খুবই খুশি। ভক্ত হিসেবে আমরা মন্দিরে পূণ্যার্থীরা যেসব রীতি পালন করে তার সবই আমরা পালন করেছি।  তার সঙ্গে প্রার্থনায় অংশ নেওয়া অন্য রুপান্তরকামী নারীরা হলেন অনন্যা, রেনজিমল এবং অবন্তিকা।