জার্মান সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পেতে পারেন ইইউ নাগরিকরা

ঘাটতি মেটাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে জার্মান সেনাবাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা প্রধান বলেছেন, সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ পদে ইইউ নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ হতে পারে। বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।noname
কম বিনিয়োগের কারণে বেশ কয়েক বছর ধরেই ভুগছে জার্মান সশস্ত্র বাহিনী। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ তোলেন ন্যাটোর শর্ত অনুযায়ী জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা বাজেট বরাদ্দ রাখছে না জার্মানি। ওই অভিযোগের পরই প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় জার্মানি। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রতিরক্ষা বাজেট বর্তমানে জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দেশটি। ২০২৫ সালের মধ্যে ২১ হাজার সেনা সদস্য বাড়ানোর লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়েছে।

জার্মান সেনাবাহিনীর মহাপরিদর্শক এবারহার্ড জোরান বলেন, চিকিৎসক ও আইটি বিশেষজ্ঞের মতো পদে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তির অভাব পুরণে এই মুহূর্তে সব সম্ভাবনা খুঁজে দেখা হচ্ছে।

এবারহার্ড জোরান জার্মানির স্থানীয় এক সংবাদপত্রকে বলেন, অবশ্যই জার্মান সশস্ত্রবাহিনীর লোকবল দরকার আর সেনাবাহিনী উপযুক্ত নতুন প্রজন্ম খোঁজায় জোর দিচ্ছে। তবে ইউরোপীয় নাগরিকদের সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা হবে।

সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, জার্মান সরকার এরইমধ্যে ইউরোপীয় সহযোগিদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করেছে। তবে পূর্ব ইউরোপসহ বেশিরভাগ অংশই এতে সতর্ক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। যদিও দেশটির সামরিক বাহিনীর বেসামরিক পদে ৯০০’র বেশি বিদেশি নাগরিক কর্মরত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ভন ডান লেয়েন জানিয়েছেন, গত দুই বছরে সেনা সদস্য সংখ্যা বেড়েছে সাড়ে ছয় হাজার। বর্তমানে উর্দি পরিহিত সেনা সংখ্যা এক লাখ ৮২ হাজার। সাত বছরের মধ্যে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ২ লাখ ৩ হাজার। তিনি জানান, সেনাবাহিনীতে এখন নারীদের সংখ্যা ১২ শতাংশ। আর এই বছরে কর্মকর্তা পদে নিয়োগে আবেদন করা প্রতি তিন জনের একজন নারী।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আইন অনুযায়ী জার্মান সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবশ্যই জার্মানির নাগরিক হতে হবে। পার্লামেন্টের সশস্ত্র বাহিনী বিষয়ক কমিশনার হ্যানস পিটার বার্টেল বলেছেন, এক অর্থে এখনই ইউরোপীয় নাগরিকদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, জার্মান সেনাবাহিনীতে কর্মরত বহু সদস্য এখন দ্বৈত নাগরিকত্ব বহন করেন আবার অনেকেই অভিবাসী।

গত মাসে যুক্তরাজ্যও বিদেশি নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ শুরুর ইঙ্গিত দেয়। ৮ হাজার দুইশো সেনা সদস্য, নাবিক ও বিমান বাহিনীর সদস্যের ঘাটতি মেটাতে যুক্তরাজ্যে বসবাস না করাদেরও দেশটির সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার সুযোগ দেবে।