যুক্তরাজ্য ও জার্মানি একটি বিস্তৃত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চুক্তির আওতায় একে অপরের বিরুদ্ধে হুমকি দেখা দিলে পারস্পরিক সহায়তার শর্ত থাকবে। এই চুক্তির খসড়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচজন কর্মকর্তা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো এ খবর জানিয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক দুই কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, আগামী ১৭ জুলাই দুই দেশের পার্লামেন্ট গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে যাওয়ার আগেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও সাবেক জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস গত গ্রীষ্মে একটি যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে এই চুক্তির ভিত্তি স্থাপন করেন। তখনই তারা শান্তি, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে প্রতিরক্ষা ধারা। এটি গত বছর স্বাক্ষরিত ট্রিনিটি হাউজ চুক্তির ভিত্তির ওপর গঠিত। ওই চুক্তিতে বলা হয়েছিল, এক দেশের ওপর কৌশলগত হুমকি অন্য দেশের ওপরও হুমকি হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই ধারা কার্যকর হলে দুটি ইউরোপীয় পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের সঙ্গে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গড়ে উঠবে জার্মানির। বর্তমান জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎস ইউরোপের নিজস্ব প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে যুক্তরাষ্ট্রনির্ভরতা কমানোর পক্ষে রয়েছেন।
চুক্তিতে ন্যাটোর প্রতি উভয় দেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হলেও এতে পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারের উদ্যোগ। বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে ট্রান্সআটলান্টিক প্রতিরক্ষা জোট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে।
প্রতিরক্ষা ছাড়াও চুক্তিতে অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলা, পরিবহন, গবেষণা ও উদ্ভাবনে যৌথ কর্মসূচির উদ্যোগ অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
চুক্তিটি মোট ১৮ দফা আলোচনার ফল। এর মধ্যে তিনটি বৈঠক হয়েছে বার্লিনে এবং দুটি লন্ডনে।
জার্মান পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেন, এই চুক্তিতে আমাদের সম্পর্কের প্রতিটি দিক অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তবে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।