দেয়াল নির্মাণে অনড় ট্রাম্প, জরুরি অবস্থা জারির হুমকি

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য তহবিল বরাদ্দে কংগ্রেসের অনুমোদন না পেলে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার হুমকি পুনর্বার উচ্চারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শনে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার পুরোপুরি এখতিয়ার আছে আমার।’ যুদ্ধ কিংবা জাতীয় জরুরি অবস্থাজনিত পরিস্থিতির মধ্যে সামরিক নির্মাণ প্রকল্পগুলো পরিচালনার এখতিয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্টের রয়েছে। কংগ্রেসকে পাশ কাটাতে সে সাংবিধানিক ক্ষমতাই ব্যবহার করার হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শন করেন ট্রাম্প
মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে বরাদ্দ অনুমোদনের প্রশ্নে ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের সমঝোতা না হওয়ায় ২০ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে চলছে আংশিক শাটডাউন। তারপরও দেয়াল নির্মাণের প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ (প্রতিনিধি পরিষদ) এখন ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি প্রতিনিধি পরিষদ একটি বাজেট বিল পাস করলেও তাতে মেক্সিকো সীমান্তের জন্য তহবিল বরাদ্দ রাখা হয়নি। আবার ট্রাম্পও জানিয়ে দিয়েছেন, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলেও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে আসবেন না। সর্বশেষ বুধবার (৯ জানুয়ারি) ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে বৈঠককে ‘সময় নষ্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি জানান,শীর্ষ ডেমোক্রেটদের ‘বাই-বাই’ বলতে হয়েছে তাকে।

দুই পক্ষের আলোচনায় অচলাবস্থা চলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার টেক্সাসের রিও গ্রান্ডে ভ্যালির ম্যাকঅ্যালেনে একটি সীমান্ত টহল স্টেশন পরিদর্শনে যান ট্রাম্প। তিনি বলেন, দেয়াল নির্মাণের জন্য কংগ্রেস যদি অর্থ বরাদ্দ না দেয়, ‘তবে আইনপ্রণেতাদের পাশ কাটাতে আমি সম্ভবত, বলা চলে অনেকখানি নিশ্চিতভাবেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করব।’

ট্রাম্পের দাবি, তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে চান না, তবে বাধ্য হলে তা থেকে পিছপা হবেন না। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এখনও তা করতে প্রস্তুত নই। তবে করতে হলো করব।’  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জরুরি অবস্থা জারি করলে ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি চ্যালেঞ্জে যেতে পারবেন, তবে ট্রাম্পের বিশ্বাস তিনি ওই চ্যালেঞ্জে জিতে যাবেন।

উল্লেখ্য, মার্কিন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনও কখনও মার্কিন কংগ্রেস তা পাস করাতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দেওয়া হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুর্থাংশ কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ বরাদ্দ করা আছে। বাকি এক চতুর্থাংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহার্য। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সৃষ্টি হয় ‘অচলাবস্থা’। বরাদ্দ কম পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১৫টি কেন্দ্রীয় দফতরের মধ্যে ৯টিতে আংশিক শাটডাউন শুরু হয়।