যুক্তরাষ্ট্রে বেতনের দাবিতে সরকারি কর্মীদের মিছিল

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান শাটডাউন বন্ধের দাবি মিছিল করেছেন দেশটির সরকারি কর্মীরা। বৃহস্পতিবার শাটডাউন ২০ তম দিনে ‘আমাদের বেতন চাই’ স্লোগান দিয়ে হোয়াইট হাউস অভিমুখে মিছিল করেন তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

যুক্তরাষ্ট্রে বেতনের দাবিতে সরকারি কর্মীদের মিছিল

মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণে বরাদ্দ অনুমোদনের প্রশ্নে ট্রাম্পের সঙ্গে ডেমোক্র্যাটদের সমঝোতা না হওয়ায় ২০ দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র সরকারে চলছে আংশিক শাটডাউন। তারপরও দেয়াল নির্মাণের প্রশ্নে অনড় অবস্থানে রয়েছেন ট্রাম্প। কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ (প্রতিনিধি পরিষদ) এখন ডেমোক্র্যাটদের নিয়ন্ত্রণে। সম্প্রতি প্রতিনিধি পরিষদ একটি বাজেট বিল পাস করলেও তাতে মেক্সিকো সীমান্তের জন্য তহবিল বরাদ্দ রাখা হয়নি। 

শাটডাউনের কারণে দেশটির ৮ লাখ সরকারি কর্মীকে ঘরে থাকতে কিংবা বেতন ছাড়া কাজ করতে বলা হয়েছে।   বৃহস্পতিবার ১৬০০ পেনিসেলভেনিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলনকারীরা শাটডাউন বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের হাতে ব্যানারে লেখা ছিলো, ‘ট্রাম্প: শাটডাউন বন্ধ করুন’ ‘অবরোধ নয়, কাজ চাই আমরা।

পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থার বিজ্ঞানী ইলাইনি সুরাইনো বলেন, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে তাকে অবসরে যেতে হবে। তিনি বলেন, এটা স্পষ্ট যে প্রশাসন সাধারণ মানুষের জীবনের ওপর এর প্রভাব বোঝেন না। নাহলে এমনটা করতেন না।

শান্তি কর্পোরেশনের কর্মী ম্যাথিউ ক্রিচটন বলেন, শাটডাউন কতদিন চলবে তার নিশ্চয়তা না থাকায় তারা কোনও খাবারসহ অন্যান্য কোনও পরিকল্পনা করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘এটা একদিনও হতে পারে কিংবা এক সপ্তাহ। এটা খুবই লজ্জার যে আমি কাজ করতে সক্ষম কিন্তু করতে পারছি না।’

আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগই সবুজ পোশাক পড়া ছিলো এবং ব্যানারে লেখা ছিলো, ‘আমি কর্মী, আমি কথা বলতে চাই।’

এছাড়া পাম বিচ, ফ্লোরিডা ও নিউ ইয়র্কেও এমন আন্দোলনের খবর পাওয়া গেছে। তবে হোয়াইট হাউসের সামনে আন্দোলনের সময় ট্রাম্প সেখানে ছিলেন না।

সেসময় ট্রাম্পও মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে জরুরি অবস্থা জারির হুমকিও দেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন, অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলেও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরে আসবেন না। সর্বশেষ বুধবার (৯ জানুয়ারি) ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে বৈঠককে ‘সময় নষ্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি জানান,শীর্ষ ডেমোক্রেটদের ‘বাই-বাই’ বলতে হয়েছে তাকে।

উল্লেখ্য, মার্কিন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনও কখনও মার্কিন কংগ্রেস তা পাস করাতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দেওয়া হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুর্থাংশ কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ বরাদ্দ করা আছে। বাকি এক চতুর্থাংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহার্য। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সৃষ্টি হয় ‘অচলাবস্থা’। বরাদ্দ কম পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১৫টি কেন্দ্রীয় দফতরের মধ্যে ৯টিতে আংশিক শাটডাউন শুরু হয়।