ফ্রান্সে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন, গ্রেফতার ১০২

ফ্রান্সে অন্তত ১০২ জন ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার দেশটির রাজধানী প্যারিসে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া কাদানে গ্যাস ও জলকামানও ব্যবহার করে পুলিশ। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

thumbs_b_c_a84d20664e7b6448bb968052a6d93ec1

ফ্রান্সের রাস্তায় চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত ১০ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জ্বালানি তেলের কর বৃদ্ধি বাতিল এবং অবসরভাতা ও ওভারটাইমের আয়ের ওপর থেকে কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ন্যূনতম মজুরিও সাত শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, আন্দোলনকারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে দেশজুড়ে তিন মাস ধরে আলোচনা চলবে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অর্থনৈতিকভাবে উপেক্ষিত ফ্রান্সের মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত জনগণ আশ্বস্ত হয়নি। তারা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনী প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তন চান।

ফরাসি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি লাখ মানুষের দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন। অন্যদিকে ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্দোলনকারীদের দমনে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। আয়ারল্যান্ডের আধাসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিই জানিয়েছে, ফ্রান্স দেশজুড়ে মোতায়েন নিয়োগ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রায় ৮০ হাজার সদস্যকে। শুধুমাত্র রাজধানী প্যারিসেই রয়েছে পাঁচ হাজার রায়ট পুলিশ।

আন্দোলনের সময় পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশও কাদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। ডি লা কনকর্ড চত্বরে পুলিশ বড় বড় ব্যারিকেড স্থাপন করেছে। সেখানে পাঠানো হয়েছে সশস্ত্রযান। অন্যদিকে শঁজ এলিজে এলাকায় রয়েছেন কয়েকশ পুলিশ কর্মকর্তা।

প্যারিসের উত্তরের একটি শহরে জড়ো হয়েছিলেন হাজারখানেক আন্দোলনকারী। অপর আরেকটি শহরে দেখা গেছে বারোশোর মতো আন্দোলনকারীকে রাস্তায় জমায়েত হতে। স্থানীয় পুলিশ আন্দোলনকারীদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বল বিয়ারিং পাওয়া গেছে। এদিকে একজন সাবেক বক্সারের ঘুষিতে দুই পুলিশ সদস্যের আহত হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ কাস্টনার বলেছেন, আন্দোলনকারীরা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যারা আন্দোলনের ডাক দিচ্ছেন তারা জানেন, সহিংসতা হবে। সুতরাং পরিণতির জন্য তারা দায়ী থাকবেন।

ফ্রান্সের মোটরযান আইন অনুযায়ী, বেশি আলো প্রতিফলিত করে এমন এক ধরনের বিশেষ নিরাপত্তামূলক জ্যাকেট গাড়িতে রাখতে হয় চালকদের। এর রঙ সবুজাভ হলুদ (ইয়োলো)। আন্দোলনকারীরা এই জ্যাকেট (ভেস্ট) পরে বিক্ষোভের সূচনা করেছিল বলে আন্দোলনটি পরিচিতি পায় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ নামে। এই আন্দোলনের কোনও ঘোষিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেই। গত নভেম্বরে শুরু হওয়া তাদের কর্মসূচিতে উত্তাল হতে শুরু করে প্যারিসসহ ফ্রান্সের বড় বড় সব শহর। জ্বালানি তেলের ওপর কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে সেইসব মানুষ, অর্থনৈতিক চাপে যারা এমনিতেই পর্যদুস্ত।