যুক্তরাজ্যকে সময় দিতে নারাজ ইউরোপীয় দেশগুলো

ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করায় হতাশ অনেক ইউরোপীয় দেশ। ফলে ব্রেক্সিট নিয়ে যুক্তরাজ্যকে আরও সময় দিতে রাজি নয় এসব দেশ। টুইটারে দেওয়া এক পোস্টে অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কুর্জ বলেছেন, ‘ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে অনুষ্ঠিত ব্রেক্সিট ভোটের ফল নিয়ে আমি হতাশ। যে কোনও পরিস্থিতিতেই ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনার সুযোগ দেওয়া হবে না।’

ব্রেক্সিটজার্মান অর্থমন্ত্রী ও ভাইস চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদিত না হওয়াকে ‘ইউরোপের জন্য তিক্ততর দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভালোমতোই প্রস্তুত। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও গ্রেট ব্রিটেন কারও কাছেই চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট  পছন্দনীয় নয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা অবশ্য আগে থেকেই একই ধরনের কথা বলে আসছিলেন। বরাবরই তারা বলে আসছেন, ব্রেক্সিট নিয়ে নতুন করে আর আলোচনা হবে না। কেননা, থেরেসা মে’র সঙ্গে স্বাক্ষরিত খসড়া চুক্তিটি সবচেয়ে ভালো সমাধান। কারণ, এর আওতায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ব্যবসাকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সময় দেওয়া হবে।

কোনও কোনও ইইউ নেতা জানিয়েছেন, তারা চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিট (নো ডিল ব্রেক্সিট) পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হওয়া চুক্তির বিকল্প খোঁজার জন্য ব্রিটেনকে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, চুক্তি ছাড়া ইইউ থেকে বের হয়ে আসলে যুক্তরাজ্য বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হবে।

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্থলসীমা থাকা একমাত্র দেশ আয়ারল্যান্ড। দেশটির সরকার বলেছে, তারা ‘অগোছালোভাবে করা ব্রেক্সিট’ এর সঙ্গে মানিয়ে নিতে এখন জোরালো প্রস্তুতি নেবে।

স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানশেজ বুধবার (১৬ জানুয়ারি) স্ট্রসবার্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন। এর আগে তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের আকস্মিক বের হয়ে আসাটা ‘বিপর্যয়পূর্ণ’ হবে।

ইইউ পার্লামেন্টের ব্রেক্সিট আলোচক ও বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুই ভেরহফস্টাডট টুইটার বার্তায় লিখেছেন, যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট যা চায় না তা তারা জানিয়ে দিয়েছে। ব্রিটিশ এমপিরা কী চান সেটাই এখন বিষয়। এরমধ্যে নাগরিকদের অধিকারের সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।

ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের মুখপাত্র বলেছেন, ‘পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটির ফল নিয়ে আমরা হতাশ। আমরা সম্মানের সঙ্গে যুক্তরাজ্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, যেন আমাদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের কথা জানানো হয়।’ সূত্র: রয়টার্স।