সাংবাদিক হত্যায় রাম রহিমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

দুই অনুসারীকে ধর্ষণের দায়ে ২০ বছরের কারাদণ্ড প্রাপ্ত স্বঘোষিত ‘বাবা’ ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু রাম রহিমকে এবার হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হরিয়ানার আদালত। সাংবাদিক রাম চন্দ্র ছত্রপতিকে হত্যার দায়ে তাকে এই দণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলায় রাম রহিমের তিন সহযোগীকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি জরিমানাও করা হয়েছে।স্বঘোষিত বাবা রাম রহিম
নিহত সাংবাদিক ‘পুরা সাচ’ নামের একটি সংবাদপত্রের সম্পাদক ছিলেন। রাম রহিমের ডেরায় কীভাবে নারীদের যৌনতায় ব্যবহার করা হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশের পর এই সাংবাদিককে ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে তার বাসভবনের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০০৩ সালে তার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মামলা দায়ের হয়। ২০০৬ সালে মামলাটি সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামলায় গুরমিত রাম রহিম সিং ছাড়াও তার  তিনি ঘনিষ্ঠ সহযোগী কুলদীপ সিং,নির্মল সিং এবং কৃষাণ লালকে আসামী করা হয়। গত সপ্তাহে তাদরে বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমান হয়েছে বলে জানিয়ে দেয় হরিয়ানার আদালত।

দীর্ঘদিন নিজেকে আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত করেছেন রাম রহিম। বিশ্বজুড়ে অসংখ্য ভক্ত রয়েছে তার। তবে ২০০২ সালে ছত্রপতির প্রতিবেদন প্রকাশের পর তার ইমেজে ধস নামতে শুরু করে। প্রয়াত রাম চন্দ্র ছত্রপতির সন্তান অনুশুল ছত্রপতি ২০০৭ সালে দৈনিক পুরা সাচকে বলেছিলেন, সহকর্মীরা বাবাকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, ‘একদিন তোমাকে কেউ হয়তো গুলি করবে’। তার উত্তরে বাবা বলেছিলেন, একজন সত্যিকার রিপোর্টর বুলেট বরণ করতে পারে, কারও জুতা নয়।

রাম চন্দ্র ছত্রপতির প্রতিবেদন প্রকাশের পাঁচদিনে মাথাতেই নিজ বাসভবনের বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। নিজের ২১ বছর বয়সে বাবাকে হারান অনুশুল। বাবার মৃত্যুর পর সংবাদপত্রটি নিজেই চালান তিনি। রাম রহিমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি। ২০১৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমার বাবা সত্যের জন্য জবিন উৎসর্গ করেছেন। তার জীবন উৎসর্গ করাকে নষ্ট হতে দিতে পারি না আমি’।