সরকারি কর্মীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বেতন নেননি শতাধিক কংগ্রেসম্যান

যুক্তরাষ্ট্রে চলমান শাটডাউনে সরকারি কর্মীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বেতন নেননি ১০২ জন কংগ্রেস সদস্য।  মার্কিন সরকারের আংশিক শাটডাউন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘতে পরিণত হয়েছে।শাটডাউনের ফলে কয়েক লাখ সরকারি কর্মী বেতন পাচ্ছেন না এবং বেশ কিছু সরকারি কার্যালয় বন্ধ রয়েছে।

Library of Congress Main Reading Room.jpg.jpg_9809004_ver1.0_1280_720

সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতিতে এখন পর্যন্ত ১০২ জন কংগ্রেস সদস্য বেতন না নেওয়ার কথা জানিয়েছে বলে দাবি করেছে মাকিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এর মধ্যে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় দলেরই ২০ জন সিনেটর ও ৮২ জন প্রতিনিধি রয়েছেন।  এদের মধ্যে ২৪জন প্রতিনিধি ও দুইজন সিনেটর নব্য নির্বাচিত ও চলতি বছরেই শপথ নিয়েছেন।

বেশিরভাগই প্রতিনিধি পরিষদের প্রধান প্রশসনিক কর্মকর্তা ফিল কিকো ও সিনেট ফিন্যানসিয়াল কর্মকর্তাকের তাদের বেতন স্থগিত রাখার কথা বলেছেন। আর কয়েকজন জানিয়েছেন তারা এটি দাতব্য কাজে ব্যয় করবেন।

২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে লড়াইয়ের ঘোষণা দেওয়া ডেমোক্রেট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, তিনি তার বেতন শরণার্থীদের সহায়তা করা সংগঠন এইচআইএএসকে দান করবেন।

কংগ্রেসের আরও কয়েকজন সদস্য প্রস্তাব দিয়েছেন যেন এমন আইন করা হয় যাতে সিনেটরর শাটডাউন এর বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে। ২০১৭ সালে ডেমোক্রেট প্রতিনিধি কার্ট স্রডার একটি বিল প্রস্তাব করেছিলেন যেটাতে শাটডাউনে বেতন পাবেন না সদস্য রা। আর সাউথ ক্যারোলিনার রালফ নরমানও এমন একটি সাংবিধানিক সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।  

রিপাবলিকান পরিষদের সাতজন বেতন নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। পেনিসেলভেনিয়ার প্রতিনিধি ব্রায়ান ফিতজপ্যাট্রিক সবাইকে তার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সবাইকে এমন কাজ করা উচিত। যদি কংগ্রেসে থাকেন তাহলে বেতন স্থগিত করবেন না, বাতিল করুন। তাহলেই কেবল সরকারি কর্মীদের কষ্ট বুঝতে পারবেন আপনারা।’

মার্কিন অর্থবছর শুরু হয় ১ অক্টোবর। তার আগেই বাজেট অনুমোদন করিয়ে নেওয়ার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমঝোতার অভাবে কখনও কখনও মার্কিন কংগ্রেস তা পাস করাতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সরকার পরিচালনার তহবিল জোগান দেওয়া হয়। অস্থায়ী এই বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে দুই কক্ষের অনুমোদনসহ প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের তিন চতুর্থাংশ কার্যক্রম পরিচালনার অর্থ বরাদ্দ করা আছে। বাকি এক চতুর্থাংশের বাজেট ফুরিয়ে যাওয়ায় অচলাবস্থা ঠেকাতে গত ২১ ডিসেম্বর নতুন অস্থায়ী বাজেট বরাদ্দ ছিল অপরিহার্য। তবে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বরাদ্দ প্রশ্নে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় সৃষ্টি হয় ‘অচলাবস্থা’। বরাদ্দ কম পড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১৫টি কেন্দ্রীয় দফতরের মধ্যে ৯টিতে আংশিক শাটডাউন শুরু হয়। দেয়ালের জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত না হলে জরুরি অবস্থা জারির হুমকি দিয়ে পরিস্থিতিতে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছেন ট্রাম্প।