অস্ট্রেলিয়ায় তাপমাত্রা ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তাপপ্রবাহে নাকাল জনজীবন

তীব্র দাবদাহে নাকাল অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের ইতিহাসের উষ্ণতম ১০ দিনের পাঁচ দিন সম্প্রতি পার করেছে তারা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠতে দেখা গেছে ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। তাছাড়া সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে হয়েছে নতুন রেকর্ড; ৩৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আর কখনও এতো বেশি হয়নি অস্ট্রেলিয়ায়। হয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত শনিবার (১২ জানুয়ারি) থেকে তীব্র তাপপ্রবাহে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়া। এতে একদিকে যেমন বাড়ছে হাসপাতালে অসুস্থ রোগীর সংখ্যা অন্যদিকে তেমন বনে জ্বলছে দাবানল, মরছে বন্যপ্রাণি।1547619018036_Heat_SA_16-9_15508643_1918425_20190116000128ca716e5f-1510-4afa-addf-aaa2699b1464.jpg_sd_1280x720

২০১৩ সালে সালে তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে তীব্র তাপপ্রবাহে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে দেখা গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি ছিল সবচেয়ে বেশি উষ্ণ দিন। তখন সেখানে তাপমাত্রার জাতীয় গড় ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ২০১৮ ও ২০১৭ সাল সবচেয়ে বেশি উষ্ণ বছর হিসেবে রেকর্ডের খাতায় স্থান পেয়েছে। আর ২০১৯ সালে এসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাকে হতে দেখা গেছে সর্বোচ্চ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই অস্ট্রেলিয়ায় দিন দিন এমন চরম তাপমাত্রা বৃদ্ধির ঘটনা ঘটছে।

অস্ট্রেলিয়ার ‘ব্যুরো অব মেটেরিওলজি’ (বিওএম) বলেছে, দেশটির দৈনিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। নিউ সাউথ ওয়েলসের নুনা শহরে রাতের তাপমাত্রাই ছিল ৩৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন রেকর্ড। এর আগে আর কখনও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এতো বেশি হতে দেখা যায়নি। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার অনেক স্থানে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ১০টি স্থানে তাপমাত্রার রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার শহর টারকুলা ও পোর্ট আগুস্তা। গত মঙ্গলবার টারকুলায় তাপমাত্রা ছিল ৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর পোর্ট আগুস্তাতে ৪৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় কিছু কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রার আগের চেয়ে ১৪ ডিগ্রি বেশি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে। বিওএমের জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ব্লেয়ার ট্রিউইন বলেছেন, ‘এর আগেও অস্ট্রেলিয়াতে উল্লেখযোগ্য তাপপ্রবাহ হতে দেখা গেছে। কিন্তু আর কখনও এটি দেশের এত বিশাল অংশ জুড়ে ঘটেনি।’

বিভিন্ন রাজ্যের কর্তৃপক্ষ এই তাপপ্রবাহের সময় জনসাধারণকে ঘরের ভেতরে থাকার এবং শারীরিক পরিশ্রম না করার পরামর্শ দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের দেখা গেছে সমুদ্র সৈকতে ও সুইমিং পুলে ভিজে তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করতে। তাপমাত্রার বৃদ্ধি ও খরার কারণে ভিক্টোরিয়া, তাসমানিয়া এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের বহু স্থানে গত বৃহস্পতিবার দাবানল জ্বলতে দেখা গেছে।