যৌন নিপীড়নের মামলায় জামিনে মুক্ত স্কটিশ নেতা স্যামন

ধর্ষণ প্রচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের মামলায় জামিন পেলেন সাবেক স্কটিশ ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স স্যামন (৬৪)। ১৪টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জানুয়ারিতে দায়ের করা দুই নারীর মামলায় জনপ্রিয় এই রাজনীতিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার প্রাথমিক শুনানিতে স্যামন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারিত হয়নি। উল্লেখ্য, অনেকেই মনে করেন, জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন করতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলা হয়েছে। 
noname

যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে গত বছর বিশ্বব্যাপি জনপ্রিয় হওয়া মি-টু আন্দোলনের প্রভাবে অ্যালেক্স স্যামনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের পুরনো কিছু অভিযোগ সামনে চলে আসে। দুই নারী অভিযোগ তোলেন, ফার্স্ট মিনিষ্টার থাকাকালে স্যামন তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ প্রচেষ্টার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন। ওই দুই নারী তখন পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালের আগষ্ট মাসে স্যামন দল থেকে পদত্যাগ করলেও অভিযোগ অস্বীকার করেন।

স্কটিশ সরকার স্যামনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করলেও তার ফলাফল এখনও প্রকাশ করেনি। স্যামনের পক্ষ থেকে দায়ের করা এক মামলায় আদালত ৮ই জানুয়ারী রায় দেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত পরিচালনা করতে স্কটিশ সরকার যে প্রক্রিয়া অনুসরন করেছিল তা ছিল ত্রুটিপুর্ণ। রায়ে জানা যায়, স্যামনকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে এই তদন্ত হয়েছিল। তাছাড়া তদন্তে নিয়োজিত একজন কর্মকর্তার সঙ্গে আগে থেকেই অভিযোগকারীদের  সখ্য ছিল।

জানুয়ারিতে ওই দুই নারী পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে স্যামনের বিরুদ্ধে শুরু হয় পুলিশি তদন্ত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার হন অ্যালেক্স স্যামন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল  বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারী)  এডিনবরা শেরিফ কোর্টে হাজির হন তিনি। আদালতের কাছে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং নিজেকে নির্দোষ দাবী করেন তিনি। 

উলে­খ্য, স্কটিশ রাজনৈতিক অঙ্গনে অ্যালেক্স স্যামনের রয়েছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। গতবছর সেপ্টেম্বরে তার আইনি ব্যয় নির্বাহের জন্য সমর্থকরা ক্রাউড ফান্ডিং চালু করেন এবং এতে সংগৃহীত হয় ১০০ হাজার পাউন্ড। ছাত্রাবস্থায় এসএনপি র রাজনীতির সাথে যুক্ত হন অ্যালেক্স স্যামন। ভিন্ন মত পোষনের জন্য এক সময় তাকে এসএনপি থেকে বহিস্কার করা হয়। পুনরায় ১৯৯০ সালে তিনি এসএসপি র লিডার হিসাবে নির্বাচিত হলে স্কটল্যান্ডব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় স্কটিশ পার্লামেন্ট ও ওয়েষ্টমিনিষ্টার পার্লামেন্টে এমএসপি-র একচ্ছত্র আধিপত্য সৃষ্টি হয়।২০১৪ সালে স্কটিশ গণভোটে পরাজিত হলে সরকার প্রধান থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে গর্ডন আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। যদিও ২০১৭ সালের জাতীয় নির্বাচনে হেরে যান।

গার্ডিয়ানের সম্পাদকীয় ভাষ্যে বলা হয়েছে, ব্রেক্সিট নিয়ে চলমান সংকট ও যুক্তরাজ্যের পরবর্তী নির্বাচনে স্যামনের এই ঘটনার প্রভাব পড়বে।