ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংসভাবে খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যার তদন্ত অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি বলেন, মার্কিন কর্তৃপক্ষ এখনও এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
হাঙ্গেরি সফররত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকা একটি হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দিচ্ছে না। দায়ীদের সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনতে ওয়াশিংটন আরও ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে খাশোগি হত্যাকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতার কঠোর সমালোচনা করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। এ মাসের গোড়ার দিকে টিআরটি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই ধরনের ভয়ঙ্কর ঘটনায় আমেরিকার নীরবতা আমি বুঝতে পারছি না। এমনকি সিআইএর সদস্যরাও এ হত্যাকাণ্ডে তুরস্কের সরবরাহ করা রেকর্ডিং শুনেছেন। আমরা সবকিছু পরিষ্কার করতে চাই। কারণ এটি নৃশংসতা, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এটি কোনও সাধারণ হত্যাকাণ্ড নয়।
এরদোয়ান বরাবরই বলে আসছেন, খাশোগি হত্যাকাণ্ডের চার মাস আগে সৌদি সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ এসেছিল। টিআরটি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এ খুনের পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন ২২ জন। এদের মধ্যে ১৫ জন দুইটি বিমানে করে ইস্তানবুল পৌঁছায়। হত্যাকাণ্ডের দিন তারা ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করে।
২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক জামাল খাশোগি। খুনের নির্দেশদাতা হিসেবে আঙ্গুল উঠে খোদ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রথমে এ হত্যাকাণ্ডের খবর অস্বীকার করা হয়। পরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার খবর অস্বীকার করা হয়। ওই ঘটনায় দুনিয়াজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়েন এমবিএস নামে পরিচিত সৌদি যুবরাজ। তুরস্কের মাটিতে খাশোগি খুন হয়েছেন বলে তুর্কি কর্মকর্তারা ঘাতক বাহিনীর সদস্যদের বিচারের জন্য আঙ্কারার হাতে সোপর্দ করার আহ্বান জানালেও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।