ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে ব্রেক্সিট নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য নিজ দেশের পার্লামেন্টের কাছে আরও এক দফা সময় চেয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এমপিদের কাছে এক সময় চান তিনি। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আলোচনায় আইরিশ ইস্যুসহ নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।
থেরেসা মে অঙ্গীকার করেন, এর মধ্যে তিনি যদি সংশোধিত পরিকল্পনা উপস্থাপন না করতে পারেন তবে ব্রেক্সিট নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারবেন আইনপ্রণেতারা।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেডো ব্রেক্সিট মন্ত্রী কির স্টার্মার দাবি করেছেন, যেকোনওভাবেই হোক ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে আরেকটি ভোটাভুটি করার জন্য চাপ দেবে লেবার পার্টি।
আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে আসতে (ব্রেক্সিট) আর ৪৭ দিন বাকি। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বের হয়ে যাওয়ার কথা।দিনটিকে সামনে রেখে পার্লামেন্টে নিজের প্রস্তাব করা সংশোধিত ব্রেক্সিট পরিকল্পনা পাস করাতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক কেমন হবে তা নিয়ে গত নভেম্বরে জোটটির সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিলেন থেরেসা। সে ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদন করানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। আবার থেরেসা মে’র ব্রেক্সিট প্রস্তাবে পরিবর্তন আনার প্রশ্নে বার বারই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে ইইউ ও আইরিশ সরকার। তবে পার্লামেন্টে সংশোধিত ব্রেক্সিট পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে চাইছেন থেরেসা মে। এজন্যই ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের কাছে সময় চেয়েছেন তিনি।
আইনপ্রণেতাদের থেরেসা বলেন, আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি নাগাদ নতুন প্রস্তাব অনুমোদন না করানো গেলে ব্রেক্সিট পরিকল্পনা নিয়ে আরেকটি ভোটাভুটি হবে। তখন আইনপ্রণেতারা বিকল্প প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারবেন। এসব বিকল্প প্রস্তাবের মধ্যে ব্রেক্সিট বিলম্বিত করার বিষযটিও থাকতে পারে।
বর্তমান পরিকল্পনার সমালোচকরা বলছেন, পরিকল্পনাগুলো যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালার সঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য সম্পর্কিত রাখবে এবং যুক্তরাজ্যের বাকি অংশের চেয়ে আলাদা ব্যবস্থার আওতায় চলে যাবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড।
সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কির স্টার্মার অভিযোগ করেছেন, আইরিশ সীমান্তের মতো ইস্যুগুলো নিয়ে ‘অগ্রগতি হওয়ার ভান’ করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তার দাবি, থেরেসা মে ২১-২২ মার্চের ইউরোপীয় সম্মেলনের পরে এবং ব্রেক্সিটের মাত্র এক সপ্তাহ আগে পার্লামেন্টে ফিরতে চাইছেন এবং তখন তিনি এমপিদেরকে বলবেন নিজের ব্রেক্সিট পরিকল্পনা অথবা নো ডিল ব্রেক্সিট এ দুইটির একটিকে বেছে নিতে।
কির স্টার্মার বলেন, “আমরা এমনটা হতে দিতে পারি না। এমন একটা দিন লাগবে যখন পার্লামেন্ট বলবে, ‘ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে’।”
থেরেসা মে’র পদক্ষেপকে বেপরোয়া বলে উল্লেখ করেছেন কির স্টার্মার। তিনি জানান, লেবার পার্টি একটি সংশোধনী উত্থাপন করতে যাচ্ছে। এর আওতায় ২৬ ফেব্রুয়ারি নাগাদ ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে নতুন ভোটাভুটি করতে হবে থেরেসা মেকে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি, বিবিসি।